ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: ঢাকায় করা মানহানির দুই মামলায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন পাননি। জামিন চেয়ে করা তার করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকার সংশ্লিষ্ট আদালতে খালেদা জিয়ার আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পরে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, এ দুই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতে যে আবেদন করেছিলো তা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্টে এ দুই মামলায় জামিন পাননি খালেদা জিয়া।
এর আগে ২৯ মে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট। গত ২২ মে এ দুই মামলায় জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয়া ও ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে মামলা দু’টি করা হয়। দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানোর জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ১৭ মে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৫ জুলাই গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয়া সংক্রান্ত মামলায় প্রতিবেদন জমা দেন।
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর এ বি সিদ্দিকী স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন।
আর ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট একই আদালতে একটি মামলা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।
এর আগে আজই কুমিল্লায় নাশকতার অভিযোগে করা দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগে। সেই সাথে আগামী ২৪ জুন এ বিষয়ে শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত এবং এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেন হায়দার।
আজ সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বক্তব্য পেশ করেন। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চান।
পরে খালেদা জিয়ার পক্ষে বক্তব্য রাখেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও খন্দকার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে উপরোক্ত মর্মে আদেশ দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার এ মামলাগুলোয় হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছিলেন চেম্বার বিচারপতি। বলেছিলেন, ৩১ মে (আজ) এ নিয়ে সু্প্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।
তার আগের দিন সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার তিনটি জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করে জামিন আদেশ দিয়েছিলেন।
আদালত কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার দু’টি ঘটনায় হত্যা ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা দুই মামলায় খালেদা জিয়ার ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন।
অন্য দিকে নড়াইলে মানহানির মামলাটি নট প্রেসড রিজেকটেড (উপস্থাপিত হয়নি) বলে খারিজ করেন। আদালত বলেছেন, ওই আদালতে (নিম্ন আদালত) মামলাটি শুনানি করে আসুন। যদি সেখানে জামিন না হয়, তাহলে আমরা দেবো। কারণ, এটা জামিনযোগ্য মামলা।