ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট;জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরা পরোয়ানা (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট বা পিডব্লিউ) প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সাথে আগামী ২৮ জুন পর্যন্ত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
আজ সোমবার পুরান ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো: আখতারুজ্জামানের আদালত আসামি পক্ষের আবেদন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিন বাড়ানোর আবেদন করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, বেগম জিয়ার জামিন ২৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছড়া একই তারিখে পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আরেক আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না চিকিৎসা ও ওমরাহ হজ পালনের জন্য এক মাসের সময় আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে অসুস্থ দেখানো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মৌখিক আবেদন করছেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
আজ রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন ‘প্রতি হাজিরার দিন ডাক্তার একটা কথা লেখেন- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ অসুস্থ। তাই তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করছি।’।
কাজল বলেন, ‘হাজিরার দিনই শুধু খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। খালেদা জিয়া কি আদালতে আসবেন না? না ডাক্তার তাকে আদালতে পাঠাচ্ছেন না? এই বিষয় তদন্ত করা উচিৎ। চিকিৎসককে আদালতে হাজির করলে এর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন (মৌখিক) করছি।’
দুদকের এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘চিকিৎসকের প্রক্রিয়াতে আমরা আটকে আছি। খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করলে আমরা মামলাটা দ্রুত শেষ করতে পারতাম।’
তবে আদালত দুদকের আইনজীবীর বক্তব্যের বিষয় কোনো মন্তব্য করেনি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, এই মামলায় খালেদা জিয়া জামিন বৃদ্ধি এবং তার বিরুদ্ধে যে প্রডাকশন ওয়ারেন্ট ছিল তা প্রত্যাহারের আবেদন করছি।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন ২৮ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন এবং প্রডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করেন। ওইদিন মামলাটির যুক্তি উপস্থাপনের জন্যও দিন ধার্য করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসানকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এ মামলায় অন্য আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায়ের পর পরই খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
এ মামলায় জামিন হলেও অন্য মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকায় জামিনে মুক্ত হতে পারছেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।