ক্রাইমবার্তা রিপোটঃবাংলাদেশ ‘কাশ্মিরের মতো পরিস্থিতি’ সৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে ভারতকে সতর্ক করেছেন রুহুল কবির রিজভী।আজ (মঙ্গলবার) নয়াপল্টনে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অভিযোগ করেন, “ভারত তাদের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুমাত্র ‘জনসমর্থনহীন একটি সরকারকে’ টেকানোর জন্য বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকারকে অবজ্ঞা করছে। এটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের সামিল।”
তিনি ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের প্রতি ভারতের এই নীতি যদি অব্যাহত রেখে স্বাধীন বাংলাদেশেও কাশ্মিরের ন্যায় পরিস্থিতির সম্ভাবনা সৃষ্টি করা ভারতের জন্য কি উচিত হবে?”
বাংলাদেশে চরমপন্থা মাথাচাড়া দিতে পারে উল্লেখ করে রিজভী আরও বলেন, “মনে রাখা দরকার মানুষের মৌলিক ও মানবিক অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিলে চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।”
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো থেকে বাংলাভাষীদের ঠেলে দেয়ার চেষ্টা, তিস্তা চুক্তির আশ্বাস ঝুলিয়ে থাকা, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহানুভূতি না দেখানো- এসব বিষয় তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে না।’
‘বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে’
এ প্রসঙ্গে সাবেক বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল (অব: ) এ এল এম ফজলুর রহমান রেডিও তেহরানকে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এবং মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করার কারণে ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হবার কথা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৭ বছরে ভারত অমাদের কাছ থেকে নিয়েছে; কিছুই দেয়নি। সীমান্তে হত্যা বন্ধ করেনি। মাদক তৈরি করে তা বাংলাদেশে পাঠিয়ে যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এটা দূর করার দায়িত্ব ভারতের।
তিনি তিস্তা পানি চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার পরও তাকে অনেকটা মনের কষ্টে বলতে হয়েছে ভারতের কাছ থেকে তিনি কিছু পেতে চান না।
সম্প্রতি শেখ হাসিনা ভারত থেকে ফিরে এসে ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত সারাজীবন মনে রাখবে। আমরা কিন্তু তাদের শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছি। আমরা কোনো প্রতিদান চাই না।“
গত ২৫ ও ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার লিখেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিদান চেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেন, ‘‘ভারতের পত্রিকায় যে প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে তা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ইঙ্গিত। শেখ হাসিনা এটাই একমাত্র প্রতিদান আশা করেন ভারতের কাছ থেকে, অন্য কিছু নয়।’