ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:পুরুষ ক্রিকেট দল আফগানিস্তানের কাছে হেরেই চলছে। তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ জিতেছে আফগানরা। অপরদিকে এশিয়াকাপে একের পর এক ম্যাচ জয়লাভ করছে নারী ক্রিকেট দল। সর্বশেষ আজ তারা জিতেছে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছেন তারা।
এর আগে পাকিস্তান ও ভারতকে হারিয়েছে তারা। তবে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে তারা।
সকালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশী টাইগ্রেসদের বোলিং তাণ্ডবে ৮ উইকেটে মাত্র ৬০ রান করতে পারে থাইল্যান্ড। সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট শিকার করেন সালমা খাতুন ও নাহিদা আক্তার।
৬১ রানের সহজ লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১ উইকেটে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌছে যায় বাংলাদেশের বাঘিনীরা।
তৃতীয় ওভারে ওপেনার শামিমা সুলতানা ৮ রান করে সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন নিগার সুলতানা। তার সাথে জুটি বেধে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন আয়েশা রহমান। দু’জনেই ২৫ রান করেন। থাইল্যান্ডকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
আরো পড়ুন : ভারতকেও উড়িয়ে দিলো টাইগ্রেসরা
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হেরে যখন বাংলাদেশী ক্রিকেটপ্রেমীদের মন খারাপ তখনই আনন্দের সংবাদ দিলো জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। মালয়েশিয়ায় এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর ভারত মহিলা দলকে উড়িয়ে দিলো সালমা বাহিনী। সালমা খাতুনের নেতৃত্বে এশিয়া কাপে তাদের শ্রীলঙ্কার বিপে বাজে শুরু হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সালমা-জাহানারা-রুমানারা। পাকিস্তানকে হারানোর পর তৃতীয় ম্যাচে টুর্নামেন্ট ফেবারিট ভারতকে ৭ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশটির বিপক্ষে যেকোনো ফরম্যাটে এটি বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটে প্রথম জয়।
এই জয়েও চিন্তায় থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তিন ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান ৩ ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে। আজ থাইল্যান্ডের বিপে খেলবে বাংলাদেশ।
কুয়ালালামপুরের কিনরারা অ্যাকাডেমি ওভালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। রুমানা আহমেদের ঘূর্ণিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রানই করতে পারে দলটি। জবাবে ফারজানা হকের প্রথম টি-২০ হাফ সেঞ্চুরি ও রুমানার অপরাজিত ৪২ রানের সুবাদে ২ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে ১৪২ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। মজার ব্যাপার হচ্ছে টি-২০তে এটি টাইগ্রেসদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
টি-২০তে এর আগে ৯ বার ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। আকাক্সিত জয়টি এসেছে দশম ম্যাচে, এশিয়া কাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে। এদিন রুমানার লেগ স্পিন ছাড়াও ভারতের সবচেয়ে বড় ঘাতক ছিল তিনজন ব্যাটসম্যানের রান আউট। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। আঘাতটি হানেন অধিনায়ক সালমা খাতুন। ২৬ রানের মাথায় রানআউটে কাটা পড়েন অপর ওপেনার স্মৃতি মানধানা। তৃতীয় উইকেটে পূজা ভাস্ত্রাকর ও অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর মিলে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। পূজা ব্যক্তিগত ২০ রানে বিদায় নিলে হারমানপ্রিত দিপ্তি শর্মাকে নিয়ে করেন ৫০ রানের জুটি। এই ভারতীয় অধিনায়ক ৩৭ বলে ৬টি চারে করেন ৪২ রান। এ সময় আঘাত হানেন রুমানা। দলীয় ১২০ রানে তিনি ফেরান হারমানপ্রিতকে। পরবর্তী ওভারে এসে আউট করেন দিপ্তি ও অনুজা পাতিলকে। ফলে ১৮ ওভার শেষে দলটির স্কোরকার্ড ৬ উইকেটে ১২৩ রান। সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত ভারত ১৪১ রান করে। রুমানা শেষ ওভারে রান আউট করেন ঝুলন গোস্বামিকে। ৪ ওভার বল করে রুমানা ২১ রান খরচায় পান ৩ উইকেট। অপর উইকেটটি সালমার।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ ওভারের মাঝেই দলীয় ৪৯ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলের ইনিংসের বাকি অংশ শুধুই ফারজানা-রুমানাময়। দুজন মিলে ৯৩ রানের জুটি গড়ে টাইগ্রেসদের নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ফারজানা ৪৬ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫২ রানে এবং রুমানা ৩৪ বলে ৬টি চারে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতীয় বোলারদের মাঝে একটি করে উইকেট পেয়েছেন পূজা, রাজেশ্বরি ও পুনম। ম্যাচ সেরা হন রুমানা।
সংপ্তি স্কোর- ভারত : ১৪১/৭ (হারমানপ্রিত ৪২, দিপ্তি ৩২, মোনা ১৪*, রুমানা ৩/২১)।
বাংলাদেশ : ১৪২/৩ (১৯.৪ ওভার) (শামিমা ৩৩, ফারজানা ৫২, রুমানা ৪২*; পূজা ১/২১)।
ফলাফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রুমানা আহমেদ।
এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে ভারত-পাকিস্তানকে হারানোর পর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে থাইল্যান্ডকেও ধরাসায়ী করেছে সালমা-রুমানারা। এর মাধ্যমে টানা তিনটি ম্যাচে জয় পেলো বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা। ফাইনালে উঠতে বাংলাদেশের শেষ বাধা এখন মালয়েশিয়া।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের কিনরারা একাডেমি ওভালে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬০ রান তুলতে পারে থাইল্যান্ড। জবাবে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
৬১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ৮ রান ও ব্যক্তিগত ৮ রানে ওপেনার শামীমা সুলতানা বিদায় নেন। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৪ রান করে দলকে জেতান আয়শা রহমান ও নিগার সুলতানা। দু’জনেই ২৮ বল মোকাবেলা করে সমান ২৫ রান উপহার দিয়ে অপরাজিত থাকেন।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের দাপটে একেরপর এক উইকেট হারায় থাইল্যান্ড।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট পান সালমা খাতুন ও নাহিদা আকতার। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন জাহানারা আলম, ফাহিমা খাতুন, খাদিজাতুল কুবরা ও রুমানা আহমেদ।
প্রসঙ্গত, আগামী ৯ জুন স্বাগতিক মালয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ নারী দল।