ক্রাইমবার্তা রিপোট;জালিয়াত চক্রের সৃষ্ট ভুয়া ওয়ারেন্টে ২৮ দিন জেল খাটা খুলনার এক নারীর মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী তাহরিমা ইমরোজ রিমার বাড়ি জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাটির পল্লীতে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের তদন্তে ভুয়া ওয়ারেন্টের বিষয়সহ সংশ্লিষ্ট থানার ওসির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ স্পষ্ট হয়েছে। তার সাবেক স্বামীর সঙ্গে দুষ্কৃতকারীদের যোগসাজশে ওই নারীকে হয়রানির উদ্দেশ্যেই এ কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী। তার সাবেক স্বামী বর্তমানে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামের মো. তৈয়বুর রহমান মোল্লার মেয়ে তাহরিমা ইমরোজের সঙ্গে সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার হাজী মো. দীন আলী গাজীর ছেলে মো. আইয়ুব হোসেন গাজীর বিয়ে হয় ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ। আইয়ুবের একাধিক বিয়ে ও মাদক ব্যবসার বিষয়টি প্রকাশ পায় বিয়ের পর। একসময় তাহরিমাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে মাদক ব্যবসা চালাতে চাপ দেয় আইয়ুব। এতে রাজি না হলে তালাক দেয়ার হুমকি দেয়। তাহরিমা বাধ্য হয়ে আদালতে যৌতুক আইনে মামলা করেন। জামিনে বের হয়ে আইয়ুব তাহরিমাকে জেল খাটানোর ভয় দেখায়। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানা থেকে তাহরিমার বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় একটি ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে। ওই ওয়ারেন্টে পুলিশ তাহরিমাকে গ্রেফতার করে। সেই ভুয়া ওয়ারেন্টে ২৮ দিন কারাভোগ করেন তাহরিমা।
বিনা কারণে জেল খাটানো, সিল-স্বাক্ষর জাল এবং এ কাজে সংশ্লিষ্টদের সহযোগী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাহরিমা ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেন। তবে থানার ওসি হাবিল হোসেন মামলা গ্রহণ করেননি। তিনি এ মামলা নিতে অস্বীকার করে তাকে সিলেট থানায় মামলা করতে বলেন বলে জানান তাহরিমা।
মামলা কেন নিচ্ছেন না- জানতে চাইলে ওসি হাবিল হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, ‘যেখানকার ঘটনা সেখানেই মামলা করার নিয়ম। যে কারণে আমি ডুমুরিয়া থানায় মামলা নিতে পারব না।’
তাহরিমা বলেন, ‘আমি এ হয়রানির প্রতিকার চেয়ে মানবাধিকার সংগঠনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছি। এর ভিত্তিতে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) মো. সজীব খান তদন্ত করেও হয়রানির সত্যতা পান।’
এ বিষয়ে তাহরিমা বলেন, ‘এ ধরনের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে জেল খাটানোর প্রতিকার চাই। সরকারি কাগজ ও বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে এ ধরনের কাজে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করছি।’ সাবেক স্বামী প্রতিনিয়ত তাকে আবারও ভুয়া ওয়ারেন্টে জেল খাটানোর হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।