ক্রাইমবার্তা রিপোট: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ও পিকেআর পার্টির নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যে সম্পর্কের চিড় ধরেছে বলে যে জল্পনা-কল্পনা চলছে তা নাকচ করে দিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ও দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমস এর খবরে বলা হয় যে, মাহাথির ও আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে বলে । এ বিষয়ে উপ-প্রধানমন্ত্রী আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল বলেন, তাদের উভয়ের মধ্যেই সবকিছু ভালভাবেই চলছে।
শনিবার কুয়ালালামপুরে একটি ইফতার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আজিজাহ বলেন, ‘তাদের মধ্যে কোনো ভুল বুঝাবুঝি নেই। এখানে কোনো বিবাদ আছে বলে আমি মনে করি না। আমি আগেই বলেছি, আমরা একই শিবিরে রয়েছি।’
সিঙ্গাপুরের ওই দৈনিকটির রিপোর্টে বলা হয়, পিকেআর পার্টির উপ-প্রধান দাতুক সেরি আজমিন আলীকে অর্থনীতি বিষয় মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি দলের কার্যনির্বাহী নেতা আনোয়ারের সমর্থকদের আতঙ্কিত করেছে। অজ্ঞাত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিকটি জানায়, মন্ত্রিপরিষদে আজমিনের অবস্থানকে মাহাথির শক্তি খেলার হিসাবে দেখছে পিকেআর পার্টি। পাকতান হারপানে নিজের আধিপত্য দৃঢ় করার পাশাপাশি পিকেআর পার্টিতে আজমিনের অবস্থান শক্তিশালী করতেই মাহাথির এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে বলা হয়। বিশিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাউন্সিলের মুখপাত্র হিসেবে সাংবাদিক কাদির জেসিনের পদত্যাগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে আজিজ বলেন, বাক স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও কথা বলার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই সংবেদনশীল থাকা উচিত। উল্লেখ্য,সাংবাদিক কাদির জেসিন ও আনোয়ারের মধ্যে কিছু বিষয়ে কথার যুদ্ধ চলছে।
আরো পড়ুন :
টিপিপি চুক্তি পর্যালোচনার আহ্বান মাহাথিরের
রয়টার্স
ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) বা আন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তার মতে এমন চুক্তিতে মালয়েশিয়ার মতো ছোট দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শনিবার জাপানি সংবাদমাধ্যম নিকেইকে দেয়া সাক্ষাতকারে মাহাথির এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের দিকে খেয়াল রেখেই এই চুক্তি করা উচিত। বিশ্বের শতকরা ৪০ ভাগ অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করা ১২টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এ চুক্তির লক্ষ্য ছিলো এশিয়া- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্যিক সব বাধা দূর করার পাশাপাশি সহজভাবে তথ্য-প্রযুক্তির নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত করা। মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও ছোট অর্থনীতির দেশগুলোকে তাদের পণ্য সুরক্ষার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের টিপিপি নিয়ে আবার পর্যালোচনা করতে হবে।’
চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রই এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর মাহাথিরের এই আহ্বান চুক্তিটির আরো বড় ধাক্কা হয়ে আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এর নাম দেয়া হয়েছে দ্য কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ অ্যাগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (সিপিটিপিপি)।
আরো পড়ুন :
আপাতত ‘ব্যাকবেঞ্চার’ থাকতে চাই : আনোয়ার ইব্রাহিম
ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে
‘ব্যাকবেঞ্চার’ হিসেবে থাকতেই বেশি আরামবোধ করছেন বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পিকেআর পার্টির নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম। বুধবার দেশটির পিটলিং জয়াতে পিকেআর পার্টির নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ ছাড়াও তিনি দেশটির ‘পন্ডান’ পার্লামেন্টারি আসন থেকে উপ-নির্বাচন করবেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। আসনটির বর্তমান এমপি তার স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল। আজিজাহ একই সঙ্গে বর্তমান প্রশাসনের উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
পাকাতান হারাপানেরও কার্যত প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, এটা তার জন্য বাস্তবসম্মত হবে না। কেননা এতে প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে আসীন ওয়ান আজিজাহকে খুব দ্রুতই আসনটি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি তার ‘ব্যাকবেঞ্চার’ অবস্থানেই অধিক আরামবোধ করছেন।
আনোয়ার বলেন, ‘আমি এখন মুক্ত। আমি প্রথমে দেশে-বিদেশে ঘুরতে যেতে চাই। কেননা দেশে ও বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দেয়ার জন্য আমি প্রতিশ্র“তিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমার নিয়মিত এমপি হওয়ার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এর আগে, আমি বেশ কয়েকটি মন্ত্রী পদে ছিলাম এবং বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বও পালন করেছি। তাই এখন আমি ‘ব্যাকবেঞ্চার’ হতে চাই।’
অনুষ্ঠানে ৫০ জন পিকেআর সদস্যের ৪৮ জন এবং ৬৭ জন্য পিকেআরের রাজ্য প্রতিনিধির ৫১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার নির্বাচনের পর থেকে সোস্যাল মিডিয়ার জল্পনা চলছিল যে, আনোয়ার ইব্রাহিমকে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী করে পার্লামেন্টে আনতে স্ত্রী আজিজাহ তার পন্ডান থেকে পদত্যাগ করছেন। এ ছাড়াও, আনোয়ার নিশ্চিত করেন যে আগামী ১৬ জুলাই পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তিনি বলেন, ‘লন্ডন ও তুরস্কে আমার প্রোগ্রাম রয়েছে এবং তারপরে আমি দেশে ফিরে আসব এবং যেসব রাজ্য আমি এখনো সফর করিনি, সেসব রাজ্যে সফরে যাব।’