দুদকের পরিচালক ড. আবুল হাচান জানান, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রকল্প ছাড়করণে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুদকের একটি টিম আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে অবস্থান করতে থাকে। একটি মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের জেলা পরিষদ প্রদত্ত অনুদান ছাড় করনে জনৈক শিক্ষক এক লাখ টাকা জেলা পরিষদের ষাঁট লিপিকার শাহীদুজ্জামানকে দেওয়া মাত্র দুদক টিম তাকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তাকে সদর থানায় সোপার্দ করা হয়।
————————————————————–
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন :
————————————————————–;
আটকের এ ঘটনা নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলামসহ জেলা পরিষদ সদস্যরা আজ (মঙ্গলবার ) বেলা আড়াইটায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ সময় সেখানে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম বাবুসহ নির্বাচিত অধিকাংশ সদস্য ও জেলা পরিষদের অধিকাংশ কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের কর্মচারীদের মধ্যে দু’টি গ্র“প রয়েছে। জেলা পরিষদের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান ওই দুই গ্র“পের একটিতে নের্তত্ব দেন। তার বিপক্ষের গ্র“পে ছিল আটক এ কে এম শাহীদুজ্জামান। শাহীদুজ্জামান বিভিন্ন সময় এস এম মাহবুবুর রহমানের বিভিন্ন দুর্নীতির খবরা-খবর জেলা পরিষদ সদস্যদেরকে জানাতেন। এ কারণে ঘুষ গ্রহণের নাটক সাজিয়ে শাহীদুজ্জামানকে ফাঁসানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, দুদকের সদস্যদের কাছে আমরা বার বার বলেছি উদ্ধারকৃত টাকা দেখাতে। কিন্তু তারা উদ্ধারকৃত ঘুষের ওই টাকা আমাদেরকে দেখায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদে যতোগুলো কর্মচারি রয়েছে তার মধ্যে এ কে এম শাহীদুজ্জামান সৎ, অত্যন্ত নমনীয়। সে শতভাগ ষড়যন্ত্রের শিকার। আমরা তার নি:শর্ত মুক্তি দাবী করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, হাসান হাদী নামের এক হলুদ সাংবাদিক এবং সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম মাহবুবুর রহমানের ছেলে জেলা পরিষদের কর্মচারি মেহেদী হাসান এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত। তারাই ওই সাজানো নাটক সাজিয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমানের খুবই ঘনিষ্টজন ওই হলুদ সাংবাদিক হাসান হাদী।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের অতিতের যেসব বদনাম রয়েছে তা থেকে কাটিয়ে উঠতে আমরা কাজ করছি। প্রতিটি কাজে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ ধরনের সাজানো কাহিনী তৈরী করে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের ভাবমুর্তীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
তারা বলেন, আটক শহীদুজ্জামান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীর ষাঁট লিপিকার হিসেবে কাজ করেন। ১০ দিন আগে থেকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে সাতক্ষীরা ডিডিএলজি’র উপ-পরিচালক শাহ আব্দুল সাদি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।। তিনি এসেই বলে দিয়েছেন, অর্থনৈতিক কোন ফাইলে তিনি স্বাক্ষর করবেন না। বর্তমানে স্টাফদের বেতন বিল ছাড়া তিনি অর্থসংশ্লিষ্ট কোন ফাইলে স্বাক্ষর করছেন না। এছাড়া জেলা পরিষদের কোন কর্মচারীর ক্ষমতা নেই কোন ফাইল পাশ করানো বা মুভ করানো। কোন ফাইল পাশ করাতে হলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। বিধায় অফিসের একজন ষাঁট লিপিকার কোন প্রতিষ্ঠানের ফাইল পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ গ্রহন করেছে এটা কোন মতেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে দেখার জন্য দাবী জানান।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান জানান, আমি ছুটিতে রয়েছি। অফিসের কোন খবর আমি রাখিনা। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।