মনে হল কোনো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ঢুকে পড়েছি: আসিফ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে করা মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর জামিন পেয়েছেন গত সোমবার।

জেল থেকে বেরিয়ে তার ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য জেলখানার স্মৃতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখছেন নিয়মিত।

এর আগের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি নিজেকে একজন বাবা-মা হারা এতিম সন্তানের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

বৃহস্পতিবারের স্ট্যাটাসে তিনি আটক হওয়ার পর কারাগারে যাওয়া ও কয়েদিদের ভালোবাসা পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।

তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি  পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

চোখেমুখে বিরক্তি নিয়ে রেডি হলাম। শুধু দাঁত ব্রাশ আর মাথায় তেল-পানি দিয়েছি। লুঙ্গি-স্যান্ডেল সু আর গোল গলার টি-শার্ট পরা আমি ২৫০২৭।

সকালের ঝাঁজালো রোদ স্বল্প ঘুমের চোখ দুটোকে মুক্তি দেয়নি। লাইনে দাঁড়ানো থেকে বেঁচে গেলাম।

আমদানিতে নতুন কয়েদিরা বসে আছে। মনে হল কোনো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ঢুকে পড়েছি।

রাত জাগা সাধারণ কয়েদিরা সিরিয়াল মেনে বসে আছে। একটু শঙ্কা জাগলো। আমাকেও কি এভাবে হাঁটু ভেঙে বসতে হবে? নাহ… বেঁচে গেলাম। যথাবিহিত সম্মান জানিয়ে শাওন আমাকে নিয়ে গেল রেজিস্ট্রি বইটার কাছে। শুধু সাইন করেই মুক্তি পেলাম।

রাইটার ছেলেটা শুধু বলল- কষ্ট করে কেন এসেছেন!! বেশি কথা না বলার সিদ্ধান্ত যেহেতু নিয়েছি, তাই বললাম- নিয়ম ঠিক রাখতে এসেছি, ছবি কখন তুলবেন?

বলল- ভাই সাড়ে ১০টায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম- তা হলে কি অপেক্ষা করব? আশ্বস্ত হলাম। ওরা বলল আপনি বিশ্রাম করুন, আমরা সাড়ে ১০টায় ক্যামেরা নিয়ে আসব।

চান্স পেয়েই বলে ফেললাম- ভাই সাড়ে ১১টায় আসেন, একটু ঘুমাব। প্রত্যুত্তর –সমস্যা নাই, কেবিনে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

তার পর থেকেই বিভিন্ন সেলের কয়েদিরা আমার রুমে ঢুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জিজ্ঞেস করা শুরু করল- কেমন আছি!!

এমনিতেই প্যাঁচে আছি। শুস্ক হাসি দিয়ে বলেছি- ভালো আছি, একটু ঘুমাতে চাই ভাই। লাভ হল না…।

এর মধ্যে আমার কেবিনমেটরা কড়াকড়ি স্থাপন করলেন, আর কেউ ঘুম ভাঙাতে পারেনি অন্তত এক ঘণ্টার জন্য।

যারা আমাকে চেনেন না, এই মানুষগুলো আমার ঘুমের সুযোগ করে দিলেন কোন সম্পর্কের অধিকারে!! আসলেই উনারা কি ভয়ঙ্কর আসামি!!

ভয়ঙ্কর ব্যাপারটা আসলে কি? আমি অবুঝ হিসেবেই নিজেকে বোঝাতে পেরেছি- ওরাই আমার বন্ধু, কারাবন্ধু। কোনো লেনদেন ছাড়াই ভালোবেসে ঋণী করে রেখেছেন…

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।