বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
এসময় রিজভী বলেন, কারাগারের ভগ্নস্তুপের গুমোট পরিবেশে চিকিৎসাহীন দেশনেত্রী ট্র্যানজিয়েন্ট স্কীমিক এ্যাটাক (টিআইএ) এ আক্রান্ত হয়ে অজ্ঞান হলেও এখনও তাঁর চিকিৎসার সুরাহা করেনি সরকার। তাঁর জীবন আশঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরী হলেও দীর্ঘসূত্রিতা করে বেগম জিয়াকে কোন বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কীনা তা নিয়ে দেশের সর্বত্র মানুষের মনে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।
“শেখ হাসিনা বিচারিক প্রক্রিয়াকে কব্জায় নিয়ে তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে দূরে সরিয়ে দিতেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কালক্ষেপণ করছে এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের দিয়ে আজেবাজে কথাবার্তা বলাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে, তিনি সেই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত। অথচ নিম্ন আদালতে জামিনযোগ্য মামলায় কুটকৌশল করে তাঁর জামিন পাওয়ার পথ পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ কাজটি করা হচ্ছে স্বয়ং সরকার প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে। তাঁর উদ্দেশ্য পরিস্কার, তা হলো রাজনৈতিক ময়দান থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দেয়া।
——0————
সিএমএইচেও রাজি নন খালেদা জিয়া, প্যারোলের আবেদন পেলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হলে জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিএমএইচে চিকিৎসা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া। তার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা আছে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বুধবার খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে কোনো আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আসেনি। এ বিষয়ে কোনো আবেদন করা হলে জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের প্রধান। আমরা তাঁর চিকিৎসার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এ কারণেই আমরা প্রথমে তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে চেয়েছি। তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে সিএমএইচে চিকিৎসা নিতে প্রস্তাব করেছেন। এটি দেশের সব হাসপাতাল থেকে অনেক গুণে ভালো। এখানেও তিনি চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।’
এখন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কোথায় হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখন চিকিৎসকরা বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। চিকিৎসকরা যে পরামর্শ দেন, আমরা সেটাই অনুসরণ করব।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া চাইলে এখনো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন। দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসকরা এখানে আছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার সময় প্রয়োজনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও থাকতে পারবেন। এতে কোনো বাধা নেই।’
বিএনপির দাবি ও খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে অসুবিধা কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলকোডের বিধান অনুযায়ী একজন কারাবন্দির পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে।
ইউনাইটেড হাসপাতাল নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি বারবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার দাবি করে আসছে। এর পেছনে কোনো রাজনীতি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসার মান আরো আধুনিক।
পারিবারিক খরচে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছিলেন তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার।