ক্রাইমবার্তা রিপোট:ঢাকা : বাংলাদেশের আকাশে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে এরই মধ্য দিয়ে শেষ হলো পবিত্র মাহে রমজান। শনিবার সারাদেশে একযোগে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
সভায় ধর্মমন্ত্রী জানান, সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের আকাশে হিজরি ১৪৩৯ সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই শনিবার শাওয়াল মাসের প্রথম দিন দেশে ঈদ-উল-ফিতর পালিত হবে।
শাওয়ালের চাঁদ দেখা দেয়ায় এবার হিজরি সালের রমজান মাস শেষ হল ২৯ দিন। মধ্যপ্রাচ্যে বৃহস্পতিবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শুক্রবার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় ঈদ উদযাপিত হয়।
এদিকে, সিয়াম সাধনার পর ঈদ উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশের মুসলমান সম্প্রদায়। রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার ২৯ রোজা হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হিসাবে এবার রাজধানীর ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে গ্রামে গেছেন। যানজট আর পথের ভোগান্তির পরও ঈদের চাঁদ দেখার খবরে উৎসবের রঙ ছড়িয়েছে দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। দিনটি শুরু হবে ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন ঈদগাহে ইতোমধ্যে সে জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুত রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ প্রাঙ্গণ। এবার বর্ষাকালে হচ্ছে ঈদ। তাই বৃষ্টি বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। সে জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে।
নামাজের পরপরই ঈদগাহগুলোতে চিরচেনা এবং কাঙ্ক্ষিত দৃশ্যের অবতারণা হবে। প্রত্যেক মুসলমান একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন। শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স নির্বিশেষে হবে আলিঙ্গন। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের এ এক মধুর বহিঃপ্রকাশ।
ঈদের একটি বড় অনুষঙ্গ নতুন পোশাক। মাসজুড়ে বা অনেকে এর আগে থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করেন। এ বছর রাজধানীসহ বিপণিবিতানগুলোতে প্রতিবারের মতোই ভিড় দেখা গেছে। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ অবশ্য মন্দাভাবের কথা বলেছেন। তারপরও কেনাকাটার যে কমতি ছিল না, রাজধানী বা দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর রাস্তার তীব্র জট বা বিপণিবিতানের কষ্ট-দেয়া ভিড় তার প্রমাণ। নতুন কেনা পোশাক-জুতা বা অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে শিশুদের আনন্দই বেশি। বড়রাও কম যান না। পোশাকগুলো ইতোমধ্যেই হয়তো দেরাজ খুলে অনেকবারই দেখা হয়ে গেছে। কাল হবে ভাঁজ ভাঙা। ঈদ মোবারক।