বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’র সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন রমাদান মাস আমাদের প্রকৃত মুমিন হবার শিক্ষা দিয়ে থাকে। মুসলমানরা কিভাবে তাদের প্রাত্যহিক দিন যাপন করবে, অসহায় মানুষের দুঃখ অনুভব করবে, অন্যের প্রতি অপরের দায়িত্ব কর্তব্য পালন কী রূপে করা যায় এসবের আসল প্রশিক্ষণ লাভ করা যায় পবিত্র এ মাসের মাধ্যমেই। এছাড়া জালিমের জুলুম প্রতিহত করে দ্বীনের সঠিক দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার প্রকৃত শিক্ষা লাভ করা যায় এ মাসেই। পবিত্র মাসেই আল্লাহ মানবজাতির হেদায়াতের মহাগ্রন্থ নাযিল করার পাশাপাশি বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে দ্বীন ইসলাম বিজয়ের সূচনা করেছিলেন। দেশে ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে বিগত মাসের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ তাকওয়ার গুণাবলী কাজে লাগাতে হবে। বিরোধী শক্তি ইসলামের অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে দেয়ার যেসব হিংসাত্মক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে তাদের এ সকল অপচেষ্টা মাড়িয়ে দ্বীনের মর্দে মুজাহিদদের এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে নিজ জীবনে রমজানের বাস্তব শিক্ষা প্রতিফলিত করতে হবে। এর মাধ্যমেই আমরা ¯্রষ্টার উত্তম বান্দা হিসেবে পরকালে মুক্তি পেতে সক্ষম হবো।
ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তরের ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (২৩.০৬.’১৮) এসব কথা বলেন। নগর উত্তর সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ’র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আ স ম রায়হান’র পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, শিবির নেতা কামাল হোসাইন, আমান উল্লাহ, আবু জোবায়ের, আহসান উল্লাহ, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যতই করা হোক না কেন যে জমিনে শাহাদাতের রক্ত ঝরেছে সেখানে ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে যা যুগে যুগে ইতিহাসর সাক্ষ্য দেয়। তাই কোন রকম ভয় কিংবা হতাশ না হয়ে আদর্শিক আন্দেলনের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে হবে।
প্রধান বক্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন জাতির ঘাড়ে চেপে বসা ফ্যাসিবাদী সরকার অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে আধিপত্য শক্তির উপর ভর করে দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চাইছে। এজন্যে তারা বিরোধী মতের মেধাবী ছাত্রদের বিনা অপরাধে আটক করে নির্যাতনের পর কথিত কল্পকাহিনী বানিয়ে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করে যাচ্ছে। আটককৃত কাউকে কোন বিচার বা আদালতে হাজির করার দায় পর্যন্ত বোধ করছে না। তারা নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে যেয়ে দেশকে ধর্মহীন করার মাধ্যমে যুব সমাজকে ধ্বংসাত্মক পথে ঠেলে দিচ্ছে। আবার এর দায় বিরোধী রাজনীতিক দলের উপর চাপাচ্ছে যা জাতির সাথে চরম উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি এ ধরণের জঘণ্য কর্ম থেকে দেশকে বাঁচাতে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার উপর জোর দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আহমেদ সাদমান সালেহ বলেন ছাত্রশিবির কখনো চরম পন্থা কিংবা আইনের পরিপন্থী ভিন্ন পথকে বিশ্বাস করে না। ইসলামের সাথে এসব জঘণ্য কর্মের কোন রকম সম্পর্ক নেই। এ ধরণের ঘটনায় জড়িতরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার চক্রান্ত করছে। তিনি নিজেদের চারিত্রিক মাধুর্য উৎকর্ষের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে ছাত্র সমাজের কাছে দ্বীনের সঠিক দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রত্যেক শিবির কর্মীর প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বক্তারা নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঈদের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারন করেন। প্রেসবিজ্ঞপ্তি