আঙ্কারা থেকে হাফিজুর রহমান:তুরস্কের পার্লামেন্টারি ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। নতুন সংবিধান অনুসারে জরুরি অবস্থার মধ্যেই দেশটির নাগরিকরা ভোট দিতে শুরু করেছেন।
এই ভোটের মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে আজ দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হবেন।
স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
সারা দেশে ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন নিবন্ধিত ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৫টি ব্যালট বাক্সে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন। খবর আনাদলু এজেন্সির।
ভোটকেন্দ্রে ছবি বা ভিডিও করা যায় এমন কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
প্রত্যেক ভোটারকে একটি খামে দুটি আলাদা ব্যালট পেপার দেয়া হয়। একটি প্রেসিডেন্ট ও অন্যটি পার্লামেন্টারি নির্বাচনের ভোট। ভোট শেষ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট প্রথম গণনা করা হবে।
নির্বাচনে মোট আটটি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছয়জন। তারা হচ্ছেন- বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও একে পার্টির প্রার্থী রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, সিএইচপির মুহাররেম ইনজে, ইয়ি পার্টির মেরাল আকসেনার, কুর্দিদের সমর্থিত এইচডিপির সালাদিন দেমিরতাশ, ভাতান পার্টির ডোগু পেরিনজেক এবং সাদাত পার্টির তেমেল কারামুল্লাউলু।
তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এরদোগান ও মুহাররেম ইনজের মধ্যে।
তুরস্কের ইতিহাসে এবারই প্রথম জোটগতভাবে অংশ নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। এরদোগানের একেপির নেতৃত্বাধীন জোট পিপলস অ্যালায়েন্সে রয়েছে একে পার্টি, জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি এবং ইসলামি জাতীয়তাবাদী দল বুয়ুক বির্লিক পার্টি।
অন্যদিকে সিএইচপির নেতৃত্বে গঠিত জোট নেশন অ্যালায়েন্সে রয়েছে সিএইচপি, ইয়ি পার্টি, ইসলামপন্থী দল সাদাত পার্টি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।
বলা হচ্ছে, গত দেড় দশক তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা এরদোগানের জন্য এ নির্বাচন একটি কঠিন পরীক্ষা। কারণ এই ভোটে জয়লাভ করলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হবেন।
এরদোগান জয়লাভ করলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত হবে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন এবং যে কোনো সময় সংসদ ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন।
২০১৯ সালে দেশটিতে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর এক বছর আগেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পুনর্বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে নিজের ক্ষমতা আরও সংহত করার চেষ্টা করছেন তিনি। গত ১৫ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে তার দল একে পার্টি।
২০১৬ সালের এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর নিজের ক্ষমতা সংহত করার পদক্ষেপ নেন তিনি। তখন থেকে জরুরি অবস্থায় রয়েছে তুরস্ক।