আঙ্কারা থেকে হাফিজুর রহমান: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভের পর রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান বলেছেন, প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে তুরস্ক দুনিয়াকে গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়েছে। এ নির্বাচনে তুরস্কের জনগণ, এ অঞ্চল এবং দুনিয়ার সব নিপীড়িত মানুষের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এ বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়, এ বিজয় ৮ কোটি তুর্কি নাগরিকের বিজয়।
সোমবার স্থানীয় সময় রাজধানী আঙ্কারায় নিজের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির প্রধান কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
এরদোগান বলেন, শাসক নয়, বরং সবসময় জনগণের সেবক হওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার দেশের জনগণ এ ব্যাপারে অনেক সজাগ।
তুরস্কে রোববার একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট পেয়েছে এরদোগানের জোট। অন্যদিকে পিপলস অ্যালায়েন্সের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররেম ইনজের দল সিএইচপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৩৪ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট।
পার্লামেন্ট নির্বাচনেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে এরদোগানের দল একে পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট। ৬০০ আসনের পার্লামেন্টে এরদোগানের দল একেপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ২৯৩ জন এমপি। জোট শরিক এমএইচপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৫০ জন। সিএইচপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ১৪৬ জন এমপি। তাদের জোট শরিক ইয়ি পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৪৪ জন।
এদিকে এরদোগানের বিজয়ের খবরে রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তার সমর্থকরা। দেশ-বিদেশ থেকে আসতে শুরু করে একের পর এক অভিনন্দন বার্তা। এরইমধ্যে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, তার্কিশ রিপাবলিক অব নর্দার্ন সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা আকিঞ্চি, বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসোভ প্রমুখ।
২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১১ বছর তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এরদোগান।
২০১৪ সালেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন। তার প্রধান সমর্থক হচ্ছেন রক্ষণশীল ও ধার্মিক তুর্কিরা। তিনি তুরস্কের এতকাল ধরে চলে আসা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধকে শক্তিশালী করেছেন এবং তার সময়ে দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
২০১৭ সালে সরকারি স্কুলগুলোর এক অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে তুরস্ক এমন ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী হবে, যেমন ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ছিল অটোমান সাম্রাজ্য। ভৌগোলিক কারণে নিজ দেশের বাইরেও তুরস্কের নির্বাচন বা রাজনৈতিক পরিস্থিতির বৈশ্বিক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ দেশটির একদিকে ইউরোপ, অন্যদিকে ইরাক আর সিরিয়ার সীমান্ত।
Check Also
যশোরে মধুমেলার জায়গা বরাদ্দ নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের হাতাহাতি
যশোরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ‘মধুমেলা’র জায়গা ও ইভেন্ট বরাদ্দের উন্মুক্ত …