ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ তুরস্কের নির্বাচনে রজব তাইয়েব এরদোগান পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় আনন্দিত ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা। ফিলিস্তিনের বাসিন্দারা বিশেষ করে গাজাবাসীরা ব্যাপক খুশি হয়েছেন এরদোগান পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায়। ফিলিস্তিনের ব্যাপারে বরাবর সোচ্চার রজব তাইয়েব এরদোগান। বিভিন্ন সময় গাজাসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেনে এরদোগান।
বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের চলমান আন্দোলনের সময়ে তুরস্কের নির্বাচনে এরদোগানকে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করলে আন্দোলনকালীন সময়ে তুরস্কের পতাকা ও এরদোগানের ছবি নিয়ে আনন্দ উৎযাপন করে গাজাবাসীরা।
এরদোগান ফিলিস্তিনের পক্ষে সব সময়ই সরব ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিয়ে আসছেন। চলমান আন্দোলনের সময়ও এরদোগান মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর করণীয় নিয়ে জরুরী বৈঠক করেছেন।
উল্লেখ তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন রজব তাইয়েব এরদোগান। আর পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার দল একে পার্টিও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে।
আরো দেখুন : এরদোগানের জয়ে আনন্দিত তুরস্কে থাকা শরণার্থীরা
ফের তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তায়্যেপ এরদোগান। এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার। দেশটিতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৩৯ লাখ শরণার্থী জানতেন, এই নির্বাচনের ফলাফলের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে তাদের ওপর। অনেকের মতে, শরণার্থীদের জন্য এরদোগানের ক্ষমতায় আসা জরুরি ছিল। অন্য কেউ নির্বাচনে জয়লাভ করলে দেশটিতে থাকা কঠিন হয়ে পড়তো তাদের।
ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যবর্তী দেশ তুরস্কে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শরণার্থীর বসবাস। পাশেই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ও ইরাক থেকে লাখ লাখ মানুষ দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছে। সিরীয়, ইরাকি, আফগান কিংবা মিশরীয় সব শরণার্থীরাই জানতো তাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই ফলাফলের ওপর।
এরদোগানের জয়ে খুশি অনেক শরণার্থী। স্বাগতই জানাচ্ছেন তাকে। ইরাকি শরণার্থী মোহাম্মদ হামদান বলেন, আমি এরদোগানকে সমর্থন করি। কারণ, তিনি ইসলামিক দেশগুলোকে ভাইয়ের মতোই দেখে। আমি আমার দেশে যুদ্ধ দেখেছি। আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমার কাছে তুরস্কের চেয়ে ভালো স্থান ছিল না।’
মিসরীয় এক শরণার্থী বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী এরদোগানকে সমর্থন দিয়েছি। যেকোনো মিসরীয় শরণার্থী তাই করবে। তিনি আমাদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। সিসির কাছ থেকে পালিয়ে আসার পর তুরস্কেই শুধুমাত্র আমাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং কাজ করার অধিকার দিয়েছে।’
তবে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। সিরীয় শরণার্থী ওসামা দোমেন বলেন, তিনি দেশে ঢোকার সময় ভয়াবহ নিপীড়নের মুখে পড়েছিলেন। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। আর শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি এরদোগানের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে এতে।
মধ্যবয়সী মিসরীয় নারী সানা বলেন, এরদোগান ও তার দল বিরোধীদলের প্রতি বিরূপ আচরণ করেছেন। তার অনেক কিছুই আছে যা আমার পছন্দ না। তার সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন অনেককে চিনি আমি। ’
তবে ভুল করলেও এরদোগানকে স্বাগত জানান তিনি। সানা বলেন, অন্য কেউ প্রেসিডেন্ট হলে শরণার্থীদের বিপদ আরো বাড়তো। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত ছিলাম অন্য কেউ জিতবে। আর সেটা হলে আমাদের তুরস্ক ছেড়ে চলে যেতে হতো। আমরা এখানে আর নিরাপদবোধ করতাম না।’
২৯ বছর বয়সী সিরীয় শরণার্থী আলা আল মাশাদানে বলেন, আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কাকে ক্ষমতায় দেখতে চাই, আমি বলতে পারবো না। তবে অন্য প্রার্থীরা এরদোগানের চেয়েও বাজে হতেন। তিনি সিরীয় সমর্থন চান। তিনি আমাদের জন্যে ‘কম খারাপ’ পছন্দ।