ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ কোটা আন্দোলনরে প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূর ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে কোটা বাতিলে সরকারের ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে ছাত্র পরিষদ নেতারা সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন নূর।
গুরুতর আহত অবস্থায় নূরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নূরের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আজ বেলা পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নেন। তবে তারাও ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়ার কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনিম সিরাজ মাহবুব বলেন, এখানে আমরা মানববন্ধন করতে এসেছি কিন্তু এতেও কিছু লোক হুমকি ধামকি দিচ্ছে। তারা বলছে যে ছবি তুলে রাখলাম, এর ফল ভালো হবে না।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদেরকে দেখে নেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
কারা হুমকি দিয়েছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে হুমকিদাতাদের পরিচয়ের কথা উল্লেখ করেননি এই শিক্ষক। তিনি বলেন, আমাদের থেকে আপনারাই ভালো জানেন। তাদের গায়ে কোনো ট্যাগ লাগানো ছিল না। কিন্তু তারা হুমকি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরপেক্ষভাবে মত প্রকাশ করতে পারুক।
নূরের ওপর হামলার বিষয়ে শিক্ষক তাসনিম মাহবুব বলেন, ভিন্ন মত থাকতে পারে। কিন্তু ছাত্রদের ওপর এরকম নৃশংস হামলা কাঙ্ক্ষিত নয়।
-0—-
হামলায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই: ছাত্রলীগ সভাপতি
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
আজ সোমবার তিনি এ দাবি করেন।
ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শনিবার থেকে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে।
এসব আন্দোলনে বিচ্ছিন্নভাবে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারাও রয়েছেন।
এসব হামলার ঘটনা নাকচ করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের কোথাও কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলন আমাদের চোখে পড়েনি। কোনো আন্দোলনকারীর ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলাও করেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জেনেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত ছিল এমন কিছু লোক, যারা প্রত্যক্ষভাবে ছাত্রদল-শিবির করে। তারা একটি বিশেষ গোষ্ঠী থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ নেই, যার কারণে নিজেদের মধ্যে কলহ তৈরি হয়েছে এবং একে অপরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে।’
‘এর বাইরে কিছু কিছু জায়গায় এসব চিহ্নিত ষড়য়ন্ত্রকারী ছাত্রদল-শিবির নেতাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিহত করছেন বলে জেনেছি। সেসব ঘটনাকে ছাত্রলীগের বলে চালিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই’, যোগ করে ছাত্রলীগ সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যের দোষ ছাত্রলীগের ওপর চালিয়ে দেয়ার ঘটনা এদেশে এই প্রথম না। আগেও হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সেসব ফলাও করে প্রকাশ করে থাকে। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, দেশের কোথাও এ ধরনের ঘটনায় কোনোভাবেই ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই।’