ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃআগের তিনবার বিশ্বকাপের নকআউট রাউন্ডে টাইব্রেকারে অংশ নিয়ে একবারও জেতায় হয়নি ইংলিশদের। তবে এবার ইতিহাস পাল্টালো হ্যারি কেনের দল। মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকা ম্যাচে তারা টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে পৌছে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখানে তারা মুখোমুখি হবে সুইডেনের।
গত পাঁচবারের দেখায় ইংল্যান্ড অপরাজিত ছিল কলম্বিয়ার বিপক্ষে। ষষ্ঠ সাক্ষাতে এর ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথমার্ধে কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেও গোল আদায় করতে পারেনি ইংল্যান্ড। হ্যারি কেন, ট্রিপারের দারুণ সব প্রচেষ্টা বিফলে যায়। কলম্বিয়াও পারেনি নিজেদের উজ্জ্বল রূপে মেলে ধরতে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে (৫৪ মিনিটে) ইংল্যান্ড কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায় পেনাল্টি থেকে। আর ইনজুরি টাইমে (৯০+৩) খেলায় সমতা আনে কলম্বিয়া।
অতিরিক্ত সময়েও কোনো গোল না হলে টাইব্রেকারে ইংল্যান্ড ৪-৩ গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শেষ দল হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার নিশ্চিত করে। এর আগে শেষ আট নিশ্চিত করেছে ফ্রান্স, উরুগুয়ে, রাশিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ব্রাজিল, বেলজিয়াম ও সুইডেন।
নির্ধারিত সময়ে পরিচ্ছন্ন খেলার চেয়ে শারীরিক ভাষাই বেশি দেখা গেল শেষ ষোলোর লড়াইয়ে। কলম্বিয়ার ১৯ ফাউলের বিপরীতে ইংল্যান্ডের ১০। হলুদ কার্ডও দেখতে হয়েছে কলম্বিয়াকে ৫ বার ও ইংলিশদের ২ বার। হ্যারি কেনদের ১২টি শটের মধ্যে টার্গেটে ছিল মাত্র দু’টি শট। বিপরীতে কলম্বিয়ার ৯ শটে মাত্র একটিই ছিল টার্গেটে। তা ছাড়া বার বার আক্রমণে গিয়ে হামেস রদ্রিগেজের অভাবটা হাড়ে হাড়েই টের পেল কলম্বিয়া। শান্ত মস্তিষ্কের এই ফরোয়ার্ড থাকলে ম্যাচটি হতে পারত ভিন্নরকম।
স্পার্তাক স্টেডিয়ামে মাত্র ৬ মিনিটে ইংল্যান্ডের ইয়ংয়ের শট কলম্বিয়ার কিপার অসপিনা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। ১৩ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন স্টারলিং। ট্রিপারের দেয়া বলটি বারের কোনা দিয়ে বের করে দেন তিনি। ১৬ মিনিটে চমৎকার গোলের সুযোগ হারান হ্যারি কেন। ট্রিপার কলম্বিয়ার ডি বক্সে শূন্যে বল ফেলেন। হ্যারি কেন দৃষ্টিনন্দন হেড করলেও সেটি ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ২২ মিনিটে ফ্যালকাও ইংল্যান্ড সীমানায় ঢুকেও বলটি পাঠিয়ে দিলেন বাইরে। ৪১ মিনিটে কলম্বিয়ার সীমানায় ফ্রি কিক থেকে ট্রিপারের শট একটুর জন্য বাইরে দিয়ে যায়। গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় উভয় দল।
৫৪ মিনিটে কলম্বিয়ার কার্লোস সানচেজ ইংল্যান্ডের হ্যারি কেনকে আটকাতে গিয়ে ডি এর ভেতর অবৈধভাবে ফেলে দেন। দৃষ্টি এড়ায় না রেফারির। ফাউলের বাঁশির সাথে পেনাল্টির নির্দেশ। স্পট কিক থেকে নিজের ষষ্ঠ গোলটি পূর্ণ করেন হ্যারি কেন (১-০)। গোল্ডেন বুটের তালিকায় শীর্ষেই রইলেন তিনি।
৮১ মিনিটে সমতায় আসার সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন কলম্বিয়ার কুয়াদ্রাদো। সম্মিলিত আক্রমণে গিয়ে কার্লোস বাচ্চা কুয়াদ্রাদোকে মাইনাস করলে পর্যাপ্ত গ্যাপ ও সময় থাকা সত্ত্বেও বলটি পাঠিয়ে দেন ক্রসবারের বহু ওপর দিয়ে। ইনজুরি সময়ে (৯০+৩) ফ্রি কিক থেকে ফ্যালকাওয়ের দুর্দান্ত শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ইংল্যান্ড কিপার পিকফোর্ড। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করে ম্যাচে সমতা আনেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা (১-১)।
ফলে ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। ১১ মিনিটে কুয়াদ্রাদো বক্সে চিপ করেন ফ্যালকাওয়ের উদ্দেশে। তিনি লাফিয়ে উঠে হেডও করলেন কিন্তু ইংলিশ ডিফেন্ডারের হালকা ধাক্কায় বলটি টার্গেটে গেল না। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ এগিয়ে ছিল কলম্বিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড। অফসাইড মনে করে রেফারির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলে এই সুযোগে বদলি খেলোয়াড় জিমি ভার্দি শট নেন বারে। কিপার এ যাত্রায় রক্ষা করেন কলম্বিয়াকে।
২৪ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন এরিক দিয়ের। বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে। নির্ধারিত ১২০ মিনিটে কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। কলম্বিয়ার পক্ষে ফ্যালকাও, কুয়াদ্রাদো, মুরিয়েল গোল করলেও মিস করেন ইউরাইব ও কার্লোস বাচ্চা। অপর দিকে ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন, রাশফোর্ড, ট্রিপার ও এরিক ডিয়ের গোল করলেও মিস করেন হেনডারসন