ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃঢাকা :সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে জোট শরিক জামায়াতে ইসলামীর সাথে বিএনপির টানাপড়েনের প্রশ্নই ওঠেনি বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের সভা শেষে তিনি বলেন, আসন্ন বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে জোটভুক্ত সব দলের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৬ জুলাই নির্বাচন সামনে রেখে ওই তিন সিটিতেই প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। দলীয় প্রতীকের এই নির্বাচনে মেয়র পদে বরিশালে মজিবুর রহমান সারোয়ার, সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজশাহীতে মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। এদিকে সিলেটে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের সিলেট মহানগরের আমির এহসান জুবায়ের।
ওই সিটি করপোরেশনে তারা বিএনপিকে ‘ছাড় দেবে না’ বলে সংবাদমাধ্যমের খবরের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সেটা তাদের বক্তব্য। আমাদের ২০ দলের বক্তব্য হচ্ছে, আমরা একক প্রার্থী নিয়েই নির্বাচন করব।’
সেক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থীর সাথে জামায়াতের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে আপনারা কী করবেন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তখন আপনারা জানতে পারবেন। তবে আমরা সিলেটে যে প্রার্থী দিয়েছি (আরিফুল হক চৌধুরী) সেটাকে ২০ দল ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।’
সেখানে প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের টানাপড়েনের শঙ্কা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো টানাপড়েন হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রশ্নই ওঠেনি। যে কারণে আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের রেজ্যুলেশনের লক্ষ করেছেন যে, আমরা ২০ দল একত্রিতভাবেই কাজ করব।’
বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিও একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার বিষয়ে দলের সম্মতি দিয়েছেন বলে জানান ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান।
‘প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় এখনও শেষ হয়নি। আমরা বলেছি যে, প্রার্থী একজনই থাকবেন,’ এহসান জুবায়েরকে নিয়ে বলেন তিনি। বৈঠকে সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
সারা দেশে কর্মরত সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন এবং নিকট আত্মীয়দের বিষয়ে ‘গোপন অনুসন্ধান’ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ২০ দলের নেতারা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি না পাওয়ার পেছনে সরকারের হাত রয়েছে অভিযোগ করে তার নিন্দা জানান ২০ দলের নেতারা। অবিলম্বে তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানান তারা।
এছাড়া কারাবন্দি সব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান এবং কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানানো হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এই বৈঠকে।
জতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করায় ধন্যবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আরো চাপ সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মুর্তজা, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এমদাদুল হক চৌধুরী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা রেজাউল করীম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।