সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র শেখ হাসিবুল হাসান ইমন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তার বাবা শহরের সুলতানপুর এলাকার শেখ ইকবাল হাসান লিটন। একই সাথে হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন যুবক ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে শেখ ইকবাল হাসান লিটন বলেন, বাগেরহাট থেকে আগত সি.আই.ডি অফিসার সাইফুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ইমন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারি হিসাবে মামলার বাদি আমার আপন ভাই শেখ আলমগীর হাসান আলমকে গত ২৬ জুলাই গ্রেফতার করে জেল হাজতে আটকে রাখে। এঘটনার পর আমার আপন বড় ভাই শেখ জাহাঙ্গির হাসান (খোকন) আমাকে আমার ঘরের বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে রাখে। পরে আমার স্ত্রী ও আমাকে ভূল বুঝিয়ে কোর্টে নিয়ে (বড় ভাই ও ভাবি) ৪টি নন জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে সহি করে নেয়। এঘটনার প্রতিবাদে গত ১ জুলাই আমি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আলমগীর হাসান আলম গ্রেফতার হওয়ার ১২দিন পর তার স্ত্রী তানিয়া সুলতানা গত ৮ জুলাই সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমার ভাইকে (আলমগীর) একজন দায়িত্বশীল লোক হিসাবে উপস্থাপন করেন। কিন্তু ইমন হত্যাকান্ডের পর এই মামলার এজাহার থেকে শুরু করে মামলার পরিচালনা করার কোন দায়িত্ব আমি আমার ভাইকে (আলমগীর) দেয়নি। বরং এটাই সত্যি যে, আমার স্ত্রী ও ছোট ছেলে রিমন কাউকে জিজ্ঞাসা না করেই আলমগীর হাসান গত বছরের ১৭ জানুয়ারী বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে একটা এজাহার করিয়ে এনে আমাকে দেখায়। এসময় নিজে মামলার বাদি হওয়ার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে আলমগীর জানায় তুই বাদি হলে আমার অসুবিধা হতো। আলমগীরের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে “কোন না কোন কুচক্রী মহল সি.আই.ডি’কে ভূল তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র করছে” বলে যে বক্তব্য দিয়েছে তা মোটেও সত্য নয়।
শেখ ইকবাল হাসান (লিটন) আরো বলেন, আমি ইমনের বাবা হিসাবে দৃড় কন্ঠে বলতে চাই বাগেরহাটের সি.আই.ডি অফিসার সাইফুল ইসলাম এই মামলার সঠিক তদন্ত করছেন। আমি তাঁর (সাইফুল ইসলাম) তদন্তে পুরোপুরি সন্তষ্ট। তিনি একজন সৎ সাহসী ও ধার্মিক ব্যক্তি। সি.আই.ডি অফিসার সাইফুল ইসলাম একজন আদর্শ। আমাকে কেউ ভূল পথে নেয়ার চেষ্টা করছে না। সঠিক তদন্ত করে তিনি হত্যাকারিদেরকে চিহিৃত করবেন এটা আমি বিশ্বাস করি।
তিনি আরো বলেন, আমার ভাই আলমগীর হাসান আলম পৈত্রিক জমি বিক্রি বাবদ ২৮ লক্ষ টাকা থেকে আমার প্রাপ্য ৭ লক্ষ টাকার মধ্যে এক লক্ষ টাকা ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারী ও বাকী ৬ লক্ষ টাকা জুন মাসে পরিশোধ করার কথা ছিল। আমার ইমনকে দেয়া ৮০ হাজার ও আলমের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে মোট দেড় লক্ষ টাকা পাওনাদার বিপ্লবকে দেয়ার কথা বলে আমি ঢাকা চলে যাই। ১৬ জানুয়ারী ইমন তার চাচা আলমের কাছে ওই এক লক্ষ টাকা চাইতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরদিন ধুলিহরের মাটিয়াডাঙ্গার আমতলা ঘের এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাছাড়া ইমন নিহত হওয়ার কিছু দিন আগে আমাদের পারিবারিক প্রাপ্য ভাগের জমিতে ছেলে ইমন খোটা মারে। সেই ঘটনার কারনে আমার ভাই আলমের সাথে ছেলে ইমনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই হত্যা মামলায় মুরাদ, বিপ্লব ও রনি নামের যে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল তারা কেউ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয়। তিনি মামলার দায় থেকে তাদের অব্যহতির দাবি জানান। একই সাথে ছেলে ইমন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির (ফাঁসি) দাবি জানান।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …