ক্রাইমবার্তা রিপোট: বাম রাজনৈতিক দলের নেৃতৃবন্দ বলেছেন, দেশে এক চরম অরাজক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। কোন ভিন্নমতকেই সহ্য করা হচ্ছে না। সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনকেই শরীরি শক্তি দিয়ে দমনের চেষ্টা করছে সরকার। তারা বলেন এভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে কিংবা রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে গণআন্দোলকে দমন করা যাবে না, ইতিহাস তার স্বাক্ষীই দেয়।
সিপিবি,বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংহতি সমাবশে তারা এসব কথা বলেন। কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংষ্কার করে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলার বিচার এবং গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে এ সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সর্বশেষ কোটা সংস্কারের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলা সামরিক জান্তাদের সৃষ্ট এনএসএফ এর কর্মকান্ডকেও হার মানিয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে ছাত্র লীগের নির্যাতনে আহতদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে – এক নির্মম নিষ্ঠুরতা।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নারীদের লাঞ্ছনা করা হচ্ছে আবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গ্রেফতার করছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত ১০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শাসকরা তাদের ক্ষমতাকে নিরংকুশ করতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্রমাগত সংকুচিত করছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে যে কালা কানুন প্রবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা নজীরবিহীন, এটা জাতির জন্য একটা অশনী সংকেত। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময়ই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। একর পর এক হামলার ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটছে অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি ঘটনারও বিচার করতে পারেনি।
অথচ বহিরাগত তত্ত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ব্যাহত করার পায়ঁতারা করছে প্রশাসন। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ব্যর্থ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনে আসীন থাকার আর নূন্যতম যোগ্যতা নেই। অবিলম্বে তার পদত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করা উচিত বলে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন।
বাসদের সাধারণ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাম মোর্চর সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স র্পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) এর কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক।
এছাড়া সংহতি সমাবশে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষাবার্তার সম্পাদক শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক আবদুস সাত্তআর, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসু।