ভোমরা: কমিশন ব্যবসার আড়ালে ভোমরা স্থল বন্দরে প্রতিদিন ঢুকছে শতশত টন ভারতীয় পচা পেঁয়াজ। আর এই পচা পেঁয়াজ প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে ভোমরা সাতক্ষীরা সড়কের পাশে। একই সাথে চলছে পরিবেশ দূষণ এবং মূল্যবান বৃক্ষ-নিধন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ভারতীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় নি¤œমানের পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠায়। কমিশনের বিনিময়ে বিক্রির সময় তাদের বাংলাদেশি এজেন্টরা পড়েন বিপাকে। বেশিরভাগ সময়ে ওই পেঁয়াজ কোন গোডাউন মালিকের কাছে বিক্রি করতে হয় অথবা নিজদায়িত্বে কোন গোডাউনে আনলোড করে নিতে হয়। গোডাউনে পচা পেঁয়াজ আলাদা বাছাই করে ভাল পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। ভারতে নাসিক থেকে ভোমরা স্থল বন্দর পর্যন্ত র্দীঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। অনেক সময় ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে সিরিয়ালের সমস্যায় ২/৩ দিন আটকেও থাকে। সেক্ষেত্রে ভাল পেঁয়াজও প্রায় অর্ধেক পচে যায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভোমরা স্থল বন্দরের কমিশন এজেন্ট এবং গোডাউন মালিকরা পচা পেঁয়াজ ফেলছেন, ভোমরা-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোমরা-শাঁখরা রাস্তার ঘোষ পাড়া পর্যন্ত এবং ভোমরা-সাতক্ষীরা সড়কে বিজিবি বাঁশকল পর্যন্ত কয়েকশত ছোট-বড় গোডাউন গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে শতশত মহিলারা আসেন ওই সব গোডাউনে পচা পেঁয়াজ বাছাইয়ের কাজে। ভোমরা স্থল বন্দরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ মহিলার কর্মসংস্থানের উৎস এই পচা পেঁয়াজ। দিনের বেলায় চলে পচা পেঁয়াজ বাছাইয়ের কাজ। রাতের অন্ধকারে পচা পেঁয়াজের বস্তা ভ্যানে অথবা ট্রলিতে লোড দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নবাতকাটির দিকে। ফাঁকা যায়গায় দ্রুত ফেলে দেওয়া হয় বস্তাগুলো। রাস্তার ধারে যে গাছগুলোর গোড়ায় পচা পেঁয়াজের বস্তা পড়ছে সেগুলোর ঘটছে অকাল মৃত্যু। ভোমরা বিজিবি বাঁশকল থেকে নবাতকাটি প্রাইমারী স্কুল পর্যন্ত পচা পেঁয়াজের গন্ধে পরিবেশ দূষিত। পথচারীরা অতিষ্ঠ। বেশি বিপদে পড়ছেন মহিলা ও শিশুরা। অনেক সময় গাড়ির ভিতরে বমি করে ফেলছেন। ১৯৯৬ সাল থেকেই ভোমরা স্থল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলেও বন্দরে বর্জ্য-ব্যবস্থাপনার কোন উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশন এবং ভোমরা ইউনিয়ন কাউন্সিল পৃথক বা যৌথভাবে কোন উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত গ্রহণ করেননি। তবে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথভাবে ভোমরা স্থল বন্দরের আবর্জনা ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন ভুক্তভোগী মহল।
Check Also
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
মুহাম্মদ হাফিজ , সাতক্ষীরা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শাখার ২০২৫-২০২৬ সেশনের পূর্ণাঙ্গ …