ভল্টের স্বর্ণ হেরফেরের খবর সত্য নয় : অর্থ প্রতিমন্ত্রী

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত স্বর্ণের হেরফেরের খবর সত্য নয় বলে দাবি করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।বুধবার সচিবালয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, শুল্ক গোয়েন্দা ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ নিয়ে মিডিয়ায় আসা তথ্য সত্য নয়। ক্ল্যারিক্যাল কিছু ভুলের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।তবে অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে এ ঘটনা ‘আইনগতভাবে’ খতিয়ে দেখা হবে। এতে কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক সহিদুল ইসলাম ও ড. মইনুল খান এবং এনবিআর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।গতকাল মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণে অনিয়মের তথ্য উঠে আসে।দৈবচয়ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ পরীক্ষা করে বেশিরভাগের ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়ে।২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জমা রাখা হয়েছিল তিন কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি, তা হয়ে আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। ২২ ক্যারেট সোনা, হয়ে আছে ১৮ ক্যারেট।এর পর গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন যথাযথ নয় বলে দাবি করা হয়।ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. রবিউল হুসাইন বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা দফতরের নিজস্ব রিপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মেশিনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেশিনের মাপের পার্থক্য হয়। এই মেশিন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, ভল্ট থেকে স্বর্ণ বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নেই। ছয় স্তরের নিরাপত্তাবলয় পেরিয়ে সেখানে যেতে হয়। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী গভর্নর, তিনিও ভল্টে যেতে পারেন না সিস্টেমের বাইরে। দু-তিন জায়গা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যেতে হয়। আর আমাদের তো প্রশ্নই আসে না। ফলে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে কিছু বাইরে যায়নি।

‘ইংলিশ-বাংলা করণিক ভুলের কারণে এ রকমটা হতে পারে’ এমনটা মন্তব্য করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তবে আমরা বিষয়টা ছোট করে দেখছি না। আমি ছোট করে দেখছি না। সামান্য ফাঁক দিয়েও বড় ঘটনা ঘটে যায়।

তিনি আরও বলেন, যারা এসেছিলেন, তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ফিরে গিয়ে তারা আবার বসবেন। আবার আলোচনা হবে।

সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, আমি আমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং এটাকে আমাদের লেভেলে অথবা অন্য কোন সংস্থাকে দিয়ে আরো অধিক পর্যালোচনা করবো। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভীত নয়।

‘গভর্নর বলে গেছেন, আপনারা যাকে দিয়ে দেখাবেন দেখান। আমাদের তরফ থেকে কোনো সংশয় নেই, সবকিছু ঠিকই আছে। জনগণের যেটা জানানোর দায়িত্ব, তাদের সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ঠিকই আছে, সঠিক আছে,’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।

এম এ মান্নান বলেন, গতকালের ঘটনার পর আমি এর সঙ্গে জড়িত দুইটি সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কথার ভিত্তিতে বলতে পারি- স্বর্ণের বিষয়টি যে মাত্রায় পত্রিকায় পরিবেশিত হয়ে তা সঠিক ও বাস্তবসম্মত নয়।

তিনি বলেন, বিষয়টি অত বড় ভুল নয়। কোনো বিষয় নিয়ে দুই সংস্থার মধ্য সামান্য ভুল হতেই পারে না। এটা কিছু না। সব স্বর্ণ ঠিকই আছে। জনগণ চাইলে সোনা দেখতেও পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দরজা খোলা আছে।

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।