ক্রাইমবার্তারিপোট: রাজশাহী জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমির অ্যাডভোকেট আবু মো. সেলিম (৫০) ও মতিহার থানা জামায়াতের আমির ওয়ালিউল ইসলাম টিপুকে (৪৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবু মো. সেলিমকে নগরীর কলাবাগান এলাকায় তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। আর রাত সাড়ে ৯টার দিকে মতিহার থানা পুলিশ ওয়ালিউল ইসলাম টিপুকে মিজানের মোড় থেকে গ্রেফতার করে।রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, জামায়াত নেতা সেলিমের বিরুদ্ধে জেলার পুঠিয়া থানায় দুটি নাশকতার মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে পুঠিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।অন্যদিকে টিপুর বাড়ি নগরীর ডাশমারি এলাকায়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মতিহার থানা পুলিশ তাকে মিজানের মোড় থেকে গ্রেফতার করে।ইফতেখায়ের আলম আরও জানান, টিপুর বিরুদ্ধে আরএমপির কাটাখালি থানায় দুটি নাশকতার মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে কাটাখলি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।শনিবার সকালে জামায়াতের এই দুই নেতাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। জামায়াতের দাবী ২০ দলীয় জোটের নির্বাচন ভুন্ডল করতেই এ গ্রেফতার অভিযান। আটককৃতদের পরিবারের দাবী কিছু দিন আগে তারা কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে। তাদের নামে কোথাও কোন মামলা ছিল না।
রাজশাহী জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমির অ্যাডভোকেট আবু মো. সেলিম (৫০) ও মতিহার থানা জামায়াতের আমির ওয়ালিউল ইসলাম টিপু (৪৭) ,সিটি করপোরেশনের বোয়ালিয়া থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল খালেক ও সহকারী সেক্রেটারি শফিকুল ইসলামকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার এবং ২নং ওয়ার্ডের রাজপাড়া এলাকায় গত ১৭ জুলাই একজন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করার সময় ৪জন মহিলাকে বিনা কারণে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে ২৪ ঘন্টা পর ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক তাদের প্রত্যেককে ১মাসের জেল দেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন উক্ত ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক। তিনি উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন যে এ ঘটনার দ্বারাই প্রমাণিত হচ্ছে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই।
গতকাল শুক্রবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ কারণে তারা কেউই বাড়িতে থাকতে পারছেন না। শুধু রাজশাহীতে নয়, সিলেট ও বরিশালেও প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা একাত্ম হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের প্রার্থীদের নির্বাচানী তৎপরতা চালাতে দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে গত কয়েকদিন পূর্বে একজন মেয়র প্রার্থী তার কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালানোর সময় প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা তাদের উপর তিনটি ককটেল হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছে। অথচ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের গেফতার করতে পারেনি। প্রকৃত পক্ষে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে সরকারের কোন তৎপরতাই পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করে অবাধে প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ অন্যান্য প্রার্থীদের গণসংযোগে সরকার ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের প্রার্থীদের মাঠেই নামতে দেয়া হচ্ছে না। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুবিধা-নিশ্চিত করতে সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তিনটি সিটিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না।
তাই অবিলম্বে তিনটি সিটি করপোরেশনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি এবং রাজশাহীতে গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও এক মাসের কারাদন্ড দেয়া মহিলাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।