নিজস্ব প্রতিনিধি: এক বৃদ্ধাকে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে নির্যাতন অত:পর বৃদ্ধার সমস্ত জমি দলিল করে নিয়েছে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় শওকত আলী শেখ। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার তালা উপজেলার আটারই গ্রামে। বৃদ্ধার করুণ আকুতির ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভুক্তভোগী বৃদ্ধার নাম গোলজান বিবি। তিনি তালা উপজেলার আটারই গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে, অভিযুক্ত শওকত আলী। তিনি আটারই গ্রামের শেখ পাড়ার মোহাম্মাদ শেখের ছেলে।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধার প্রতিবেশি খোকন মোড়ল জানান, গোলজান বিবির পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই। একটা বোন ছিল সেও চার বছর আগে মারা গেছেন। বর্তমানে বৃদ্ধা একা। ছোট্ট একটি মাটির ঘরে তার বসবাস। বৃদ্ধার বেশ কিছু জমি রয়েছে। তার জমির মধ্যে থেকে একটি জমি স্থানীয় আটারই মোড়ল ও শেখ পাড়া জামে মসজিদের কল্যাণে দান করেছেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষ সেই জমিটি মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করে আসছে। বৃদ্ধা কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বয়সের ভার আর অসুস্থার কারণে কথা বলতে পারেন না এখন। এই অসুস্থার সুযোগে বৃদ্ধার দূর সর্ম্পক্যের আত্মীয় শওকত আলী শেখ তার বাড়িতে নিয়ে যান। বৃদ্ধাকে শওকত আলীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। অতিমাত্রায় ঘুমের ঔষধ খাওয়ানোর ফলে বৃদ্ধা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। সেই সুযোগে শওকত আলী বৃদ্ধার সমস্ত জমি নিজ নামে দলিল করে নেন। বৃদ্ধা মসজিদে যে জমিটি দান করেছিলেন সেটাও শওকত নিজ নামে দলিল করে নেন। বৃদ্ধা গোলজান বিবির কাছ থেকে সমস্ত জমি দলিল করে নিয়ে শওকত তাকে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। বৃদ্ধার হাত, পা রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করে। রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উচুঁ করে ঘরের মধ্যে ফেলে দেন। ফলে বৃদ্ধার হাতের একটি আঙ্গুলও ভেঙে গেছে। মেরুদন্ডসহ দেহের অন্যান্য অঙ্গে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। গোলজান বিবি সরকার রাখেন। সে টাকাও শওকত নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, জমি দলিল করে নেওয়ার পরে সে সকল জমিতে দখলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। মসজিদে দানকৃত জমিতেও তিনি জবরদখল করার পায়তারা চালাচ্ছে।
বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেনের নজরে আসলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন, বৃদ্ধা মহিলার বিষয়টি দেখছি। বিষয়টি খুবই দু:খজনক। ইতোমধ্যে খবর নিয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।