ক্রাইমবার্তা রিপোট:: কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছে ২২ জুলাই আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপর যে হামলা হয়েছিল তার সাথে ছাত্রলীগের নুন্যতম সম্পর্ক নেয়। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ছাত্রলীগের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে ছাত্রলীগ সভাপতি এ দাবী করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পালকী চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন। তুষার সাংবাদিকদের বলেন, আমি এমামলার বাদী। ঘটনার দিন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আদালত চত্বরে আমরা উপস্থিত ছিলাম। বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আদালত চত্বর ত্যাগ করি। পরে জানতে পারি, আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সময় মাহামুদুর রহমানের উপর হামলা এবং তার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়। জামায়াত-বিএনপি নিজেদের রাজনৈতিক দ্বন্দের জেরে ছাত্রলীগকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এসময় ছাত্রলীগ জেলা কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্য বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। সেই বক্তব্য ইউটিউবে দেখে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মানহানি মামলা করেন। সেই মামলায় গত রবিবার মাহমুদুর রহমান আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক এম, এম মুর্শেদ তা মঞ্জুর করে স্থায়ী জামিন প্রদান করেন।
এদিকে জামিন মঞ্জুর করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে ছাত্রলীগ নেতারা। জামিন লাভের পর দুপুর ১২টা থেকে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে তার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে মাহমুদুর রহমান আদালতের বিচারককে বিষয়টি জানালে তিনি এজলাসে বসে থাকার অনুমতি দেন। এসময় তিনি এবং তার সঙ্গীরা বিভিন্ন পর্যায়ে তাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান কিন্তু কেউ তাঁর অনুরোধে সাড়া দেননি।
এঘটনার ৪ ঘন্টা পরে বিকেল সোয়া চারটার দিকে এজলাসে বসে থাকা মাহামদুুর রহমানকে কুষ্টিয়া কোর্ট ইন্সপেক্টরের অনুরোধে মাহামুদুর রহমান তার সঙ্গীদের সাথে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসার সাথে সাথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছ থেকে গাড়ির উপর ইট ও লাঠিসোটা ছুড়তে থাকে। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঐ গাড়ির উপর বৃষ্টির মত ইট ছুড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে কয়েকজন লাঠি সোটা নিয়ে কারের পিছন এবং সামনের দিকে হামলা চালায়।
এসময় ঐ গাড়িতে থাকা বিএফইউজে মহাসচিব এম, আব্দুল্লাহ ও ঢাকার একজন আইনজীবী জীবন মরণ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে। এসময় মৃত্যু মুখে পড়া মাহামদুর রহমান সঙ্গীদের নিয়ে পাশে জেলা মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. শামস তানিম মুক্তির চেম্বারে আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঐ রুমের বাইরেও আক্রমণ চালায়। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া ত্যাগ করে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।