তীরে এসে ডুবল বাংলাদেশ

ক্রাইমবার্তা রিপোট: দারুণ খেলেও হেরে গেল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। জয়ের পুরো সম্ভাবনার মধ্যেও শেষ দুই ওভারে রানের হিসাব ঠিক রাখার খেসারত দিলো টাইগাররা। ফলে সিরিজে সমতা প্রতিষ্ঠা করল ওয়েস্ট ইন্জিজ।

শেষ ওভারে ছয় বলে প্রয়োজন ছিল ৮ রানের। বল করতে আসেন জ্যাসন হোল্ডার। আগের ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। ব্যাট হাতে নামেন অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। কিন্তু প্রথম বলেই বিদায় নেন মুশফিকুর রহীম। ফলে ৫ বলে দরকার হয় ৮ রানের। পরের দুটি বলই হয় ডট। চতুর্থ বল থেকে মোসাদ্দেক নেন ২ রান। এখানেই ম্যাচের গতি হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এরপর মোসাদ্দেক নেন ১ রান। ফলে জয় পেতে বাংলাদেশের শেষ বলে দরকার হয় ৫ রানের। অতিমানবীয় কিছু না করলে এই পর্যায় থেকে জয় পাওয়া যায় না। তা করা যায়নি। মাশরাফি ১ রান করেন। ২৭১ রানের মোকাবিলায় বাংলাদেশ শেষ করে ৬ উইকেটে ২৬৮ রানে। হেরে যায় ৩ রানে।

আনামুল হক ওপেনার আমিনুল ইসলাম ২৩ রান করে আউট হয়েছেন। এছাড়া তামিম ইকবাল ৫৪, সাকিব আল হাসান ৫৬, মাহমুদুল্লাহ ৩৯, মুশফিকুর রহীম ৬৮, সাব্বির রহমান ১২, রান করেন।

এর আগে বৃষ্টি ভেজা উইকেটে শিমরন হেটমায়ারের সেঞ্চুরির সুবাদে স্বাগতিক দল করে ২৭১ রান। টাইগাররা অবশ্য চেপে ধরেছিল তাদের । কিন্তু হেমায়ারই দলকে লড়াই করার মতো পুঁজি গড়ে দেন। ঘরের মাঠ গায়ানায় ৯৩ বলে ১২৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন হেটমায়ার। ৮৪ বলে হেটমায়ার ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি। বাংলাদশের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানদের যেটি দ্বিতীয় দ্রুততম।

২১ বছর ২১১ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ক্যারিবিয়ানে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ডও। সেই ১৯৭৮ সালে ডেসমন্ড হেইন্স সেঞ্চুরি করেছিলেন ২২ বছর ৭ দিন বয়সে।

শেষটুকু বাদ দিলে বাংলাদেশের বোলিং খারাপ ছিল না। কিন্তু শুরু থেকেই ফিল্ডিং ছিল বাজে। ফিল্ডারদের হাত ফসকে বাড়তি রান গুণতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। ৭৯ রানে হেটমায়ারের ক্যাচ ছাড়েন দলের সবচেয়ে নিরাপদ ফিল্ডারদের একজন সাকিব আল হাসান। শেষ দিকে যেটির চড়া মূল্য দিতে হয়েছে দলকে।
ক্রিস গেইল ও এভিন লুইসর উদ্বোধনী জুটি ছিল ২৯ রানের। প্রথম ব্রেক থ্রু এদিনও আসে মাশরাফি বিন মুর্তজার হাত ধরে।

মাশরাফির একটি শর্ট বলে বল গ্যালারিতে ফেলেছিলেন লুইস। বাংলাদেশ অধিনায়ক শোধ তোলেন দারুণ ভাবে। অ্যাঙ্গেল বদলে রাউন্ড দা উইকেটে করা বল কাট করে ঢোকে ভেতরে। ১২ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার সময় লুইস শেষ করে যান দলের একমাত্র রিভিউটি।

গেইল এদিনও এগোচ্ছিলেন ধীর পায়ে। এদিনও বড় করতে পারেননি সম্ভাবনা জাগিয়েও। পাওয়ার প্লেতে ৫ ওভারের স্পেলের পর মেহেদী হাসান মিরাজকে থামিয়ে রেখেছিলেন মাশরাফি। হুট করে আবার আনেন নতুন স্পেলে। মিরাজ দলকে উপহার দেন গেইলের উইকেট (৩৮ বলে ২৯)।

মাশরাফির বোলিং পরিবর্তন কাজে লেগে যায় এর পরেও। রুবেল হোসেন নিজের প্রথম ওভারেই ফেরান জেসন মোহাম্মদকে। মাঝে ২৫ রান করা শেই হোপকে দারুণ বোলিংয়ে ফেরান সাকিব। ২৪তম ওভারে ১০২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারায় ৪ উইকেট।

সেখান থেকেই হেটমায়ার ও রোভম্যান পাওয়েলের জুটি। অনভিজ্ঞ জুটিই দলকে এগিয়ে নেন দারুণ পেশাদারীত্বে। রানিং বিটুউইন দা উইকেট ছিল দুর্দান্ত। বাজে বলের সাজাও দিয়েছেন দুজন, বিশেষ করে হেটমায়ার।

টানা দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন হেটমায়ার ৫৪ বলে। সময়ের সঙ্গে শট খেলতে থাকেন আরও বেশি। জুটির সেঞ্চুরি হয় ১০৬ বলে।

বাংলাদেশের মাথাব্যথা হয়ে ওঠা এই জুটি থামান রুবেল। আবারও নতুন স্পেলের শুরুতে উইকেট। বাজে শটে বোল্ড ৪৪ রান করা পাওয়েল।

ওই ওভারেই ধরা দিতে পারত হেটমায়ারের কাঙ্ক্ষিত উইকেট। কিন্তু সীমানায় ক্যাচ ছাড়েন সাকিব। উল্টো বল তার হাতে চুমু দিয়ে আছড়ে পড়ে সীমানার ওপারে!

৭৯ রানে জীবন পেয়ে হেটমায়ার দ্রুতই পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। এক পাশে উইকেট পড়েছে নিয়মিত। আরেক পাশে হেটমায়ার ছুটেছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

বাংলাদেশ যখন ইনিংস গুটিয়ে দেয়ার অপেক্ষায়, সেই আশায় আবার পেরেক ঠুকলেন হেটমায়ার। ৪৯তম ওভারে বিশাল দুটি ছক্কায় ওড়ালেন রুবেলকে। সেই ওভার থেকে এলো ২২ রান।

শেষ ওভারেও ছক্কা মারলেন মোস্তাফিজের বলে। শেষ পর্যন্ত তার রান আউটেই ইনিংসের সমাপ্তি। ৩ চার আর ৭ ছক্কায় ১২৫ করে যখন ফিরছেন, ছুটে গিয়ে তাকে অভিনন্দন জানালেন মাশরাফি-তামিম ইকবালরা।

Check Also

আশাশুনিতে ছাত্র শিবিরের আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্ণামেন্ট

আশাশুনি প্রতিনিধি।। আশাশুনিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির আশাশুনি উপজেলা শাখার আয়োজনে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।