ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ ও রাজবাড়ীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এসব ঘটনা ঘটে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন :
কুমিল্লায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ ডাকাত নিহত
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আল আমিন ও এরশাদ নামের ২ ডাকাত নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জেলার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি-আসমানিয়া বাজার সড়কের নারায়নপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আল-আমিন কাউছার (৩০) তিতাস উপজেলার উত্তর মানিকনগর গ্রামের খোরশেদ আলমের পুত্র এবং এরশাদ (৩২) জেলার বুড়িচং উপজেলার কংশনগর গ্রামের চরেরপাড় গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র।
নিহত এরশাদের বিরুদ্ধে ৯টি এবং আল-আমিনের বিরুদ্ধে ৫ টি ডাকাতি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
অভিযানে অংশ নেয়া ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ জানান, ডাকাতি প্রতিরোধে ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে জেলার তিতাস এলাকায় ডিবির একটি টিম অবস্থান করছিল। গভীর রাতে ওই উপজেলার বাতাকান্দি-আসমানিয়া বাজার সড়কের নারায়নপুর কবরস্থানের সামনের রাস্তায় ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে ডিবির টিমটি রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে।
তিনি আরো জানান, ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পুলিশের উপর এলোপাতাড়ি গুলি ও ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশও আত্মরক্ষায় ২১ রাউন্ড শটগানের গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৭ ডাকাতকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে মাথায় গুলিবিব্ধ হয়ে গুরুতর আহত আল আমিন ও এরশাদ নামের ২ ডাকাতকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়ার পর ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২টি দেশী তৈরী এলজি, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ৩টি ছোরা, ৭টি মুখোশ ও ২টি লোহার রডের টুকরা। এ সময় ডিবি পুলিশের দুইজন এসআইসহ ৪ ডিবি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
ডিবির ওসি নাছির উদ্দিন মৃধা জানান, নিহত ২ ডাকাতের লাশ আজ শুক্রবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।
উল্লাপাড়ায় র্যাবের সাথে ‘বন্দুুকযুদ্ধে’ নিহত ১
সিরাজগঞ্জ ও উল্লাপাড়া সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় র্যাব-১২ এর সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হজরত আলী (৪২) নামে এক অভিযুক্ত ডাকাতের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত হজরত আলী উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের পুংখাড়–য়া গ্রামের মাহবুবুল হাসানের ছেলে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার পাইকপাড়ার শ্মশানঘাট এলাকায় এ বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি শুটারগান, ১৪টি কার্তুজ, একটি কুড়াল, একটি হাসুয়া ও তিন রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।
উল্লাপাড়ার থানার অফিসার ইনচার্জ কৌশিক আকমেদ জানান, চিহ্নিত নৌ-ডাকাত দলের সরদার হজরত আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ১৬টি মামলা রয়েছে।
র্যাব-১২ এর স্পেশাল কোম্পানি সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: সাকিবুল ইসলাম খান জানান, উল্লাপাড়ার একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল উল্লেখিত এলাকায় অস্ত্র-স্বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিষয়টি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা তাদের ধরতে গেলে উপস্থিত ডাকাতরা গুলি চালাতে থাকে। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এরই এক পর্যায়ে ডাকাত হজরত আলী গুলিতে নিয়ে হলে তাকে ফেলে সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে বিভিন্ন অস্ত্র ও গোলাবারুত সহ লাশটি উদ্ধার করে। নিহতের লাশ সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাজবাড়ীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত
রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার পদ্মা নদীর বাহাদুরপুর ঘাটে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি নিহত লালন (৩৯) পূর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি লাল পতাকা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।
নিহত লালন পাবনা জেলার সুজানগর এলাকার মৃত জিতেন হালদারের ছেলে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি একনলা বন্দুক, ওয়ান শুটারগান ও ৬টি কার্তুজ উদ্ধার করেছে। নিহত লালনের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।
পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম জানান, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাংশার সুইচ গেইট এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় চরমপন্থীরা পুলিশ কে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়ে। এতে লালন আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহতের লাশ সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদেন্তর জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।