ক্রাইমবার্তা রিপোট: রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার ও হয়রানি প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, নাগরিক স্বাধীনতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ছয় নেতাকে গ্রেফতার ও হয়রানি না করতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি শুরু করতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দ্বিতীয়বারের মতো সময় প্রার্থনা করলে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন।
গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানির জন্য সময় প্রার্থনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আপিলের ওপর শুনানির ধার্য দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গতকাল আদালতে বলেন, এ মামলার শুনানির প্রস্তুতি নেই। জুতা সেলাই থেকে চণ্ডিপাঠ পর্যন্ত সব আমাকে করতে হয়। ক’দিন পর জেলা কোর্টেও যেতে হবে। এ সময় বিএনপি নেতাদের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এতগুলো, অতিরিক্ত ও ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল কেন? আপনার যদি সবই করতে হয়।
শুনানি শেষে আদালত বলেন, স্টে (স্থগিতাদেশ) নেই। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেননি। এ জন্য সময় দিচ্ছি। এরপর আদালত আগামী ১৪ অক্টোবর আপিলের শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
আদালতে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সাথে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, শিশির মনির, মাসুদ রানা প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
বিভিন্ন মামলায় আদালত থেকে জামিন হওয়ার পরও কারাফটকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে আবেদন করা হলে হাইকোর্টে তাদের সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া গ্রেফতার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দেন। বিএনপি নেতাদের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য এভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় চার বিএনপি নেতা ও দুই জামায়াতে ইসলামীর নেতার পক্ষে আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও কারাফটকে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট তাদের সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া গ্রেফতার ও হয়রানি না করার আদেশ দেন। হাইকোর্টের ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩ জুলাই বিএনপি তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালকে সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া গ্রেফতার ও হয়রানি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এজাহারে নাম নেই এমন কোনো মামলায়ও তাকে গ্রেফতার না দেখাতে বলা হয়।
হেলালের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, এ পর্যন্ত ৪১টি মামলায় আজিজুল বারী হেলালকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে এখনো কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় অন্য মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাবন্দী করে রাখছে। এ কারণে তিনি উচ্চ আদালতে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন।
একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব হাসান ও বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব হাইকোর্টে আবেদন করলে আদালত তাদের সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া জেলগেটে আটক না করতে এবং সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া গ্রেফতার ও হয়রানি না করতে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের ওই আদেশগুলোর বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
Check Also
ডিসেম্বরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স এল ২ বিলিয়ন ডলার
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধ পথে ২০০ কোটি মার্কিন (২ বিলিয়ন) ডলারের …