ক্রাইমবার্তা রিপোট: কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ঐক্যের বিজয় সব সময়ই হয়েছে। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিল ছাত্ররা। এখন আবার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বাংলাদেশ জেগেছে। এ সময় তিনি ছাত্রলীগ-যুবলীগ নিয়ে পুলিশের ‘আন্দোলন দমনকে’ বেআইনি বলে উল্লেখ করেন।
শনিবার আরামবাগস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গণফোরাম সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমরা জনগণের ঐক্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। অতীতে সব সময় আমরা ঐকবদ্ধ আন্দোলন করে জনগণের দাবি আদায় করে নিয়েছি। তাই সামনের দিনে জনগণের ঐক্যের মাধ্যমে আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করে নেবো-ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, জনগণের ক্ষমতা পুনরুদ্ধার এবং কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ সুনিশ্চিত করতে আলাপ-অলোচনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণফোরামের প্রস্তাবিত সাত দফা, লক্ষ্য ও কর্মসূচির ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, শ্রেণিপেশা ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে স্বৈরাচারবিরোধী জাতীয় ঐক্য গঠনের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, এ সরকারের প্রতি যোলো আনা অবিশ্বাস জন্মেছে। সম্প্রতি তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে তাদেরকেই জনগণের কাছে প্রমাণ করতে হবে যে তারা নিরপেক্ষ। তাদেরই প্রমাণ করতে হবে তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেউ আশা করেনি। এখানেও তারা দু’নম্বরি করেছে। বঙ্গবন্ধুর নামে তারা এসব করছে। তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে কলঙ্কিত করছে। তিনি প্রশ্ন করেন, এটা কোন আওয়ামী লীগ? তিনি নিজেকে এখনও আওয়ামী লীগ কর্মী বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এটা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ না।
তিনি বলেন, এ ধরনের নির্বাচন কমিশনের ওপর এখন কারো আস্থা নেই। এদের দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আশা করা যায় না।
ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন তো একটা বিচারকের ভূমিকায় থাকবে। একজন বিচারক তো পক্ষপাতিত্ব করতে পারে না। তাদের তো নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখতে চায় জনগণ। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো এখানে সাক্ষী গোপালের মতো আছে। তাদের তো সব কিছুতে সব ঠিক সব ঠিক বলার মতো অবস্থান জনগণ আশা করে না।
সংবাদ সম্মেলনে পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু লিখিত বক্তব্যে জানান শুক্রবার অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অত্যন্ত ভয়াবহ বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। সন্ত্রাস, গুম, খুন বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে আটক ও জেল জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ কেড়ে নেয়া রহয়েছে। দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। এবং ভিন্ন মতের কাউকে নির্বিঘ্নে সভা সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, আ.ও.ম শফিকউল্লাহ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট খালেকুজ্জামান, অ্যাডভোকেট শান্তিপদ ঘোষ, জামালউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপিকা বিলকিস বানু, মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী,মোশতাক আহমেদ, আলী নুর বাবুল, খান সিদ্দিকুর রহমান, সাইদুর রহমান সাইদ, রফিকুল ইসলাম পথিক প্রমুখ।