জনপ্রতিনিধির যাদুর বলে নাম্বারপ্লেট না দিয়ে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট!

নিজস্ব প্রতিনিধি: ঝোপ বুঝে কোপ মেরে নাম্বারপ্লেটে দেওয়ার নাম করে ৫০জন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩শ’ টাকা করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে জনপ্রতিনিধির যাদুর সাঙ্গ পাঙ্গরা।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট নিতে আসলে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩শ’ টাকা হারে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট নিতে জেলা প্রশাসনের কার্যলয় চত্তর থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে সেটা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সে কারণে সাতক্ষীরা শহীদ রাজ্জাক পার্কস্থ পৌর অডিটরিয়ামের সামনে অনেকে ডিজিটাল নাম্বার প্লেট নিতে এসে প্রতারিত হয়ে ফিরে যান। ৩০০ টাকা দিয়ে ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে বাড়ি চলে যান।
এদিকে পৌর অডিটরিয়ামে থেকে নাম্বারপ্লেট বিতরণের সময় একজন জনপ্রতিনিধির নাম ভাঙিয়ে তোলা হতো প্রত্যেকটি প্লেটের বিপরীতে ৫০০ টাকা। চাঁদাবাজির কারণে মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট এখন থেকে সাতক্ষীরা শহীদ রাজ্জাক পার্কস্থ পৌর অডিটরিয়াম থেকে আর না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশসানের পক্ষ থেকে।
কলারোয়া থেকে ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট নিতে আসা সেনা সদস্য আল আমিন বলেন, আমার সকল কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও ডিজিটাল নাম্বারপ্লেটের কারণে সেনানিবাসে মোটরসাইকেল চালাতে পারছি না। সে জন্য দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসি। আজ সকালে নাম্বারপ্লেট নিতে আসলে স্থানীয় কিছু যুবক ৩শ’ টাকা দাবি করে। তারা বলে টাকা না দিলে নাম্বার প্লেট পাবেন না। কাল ছুটি শেষ। সেজন্য বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়। পরে জানতে পেরেছি আজ থেকে এখানে নাম্বার প্লেট বিতরণ করা হচ্ছে না। ৩শ’ টাকা দিয়েও প্রতারিত হলাম। শুধু আমি টাকা দেয়নি, সকাল থেকে প্রায় ৫০জন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩শ’ টাকা করে আদায় করেও নাম্বারপ্লেট বিতরণ করা হয়নি। আশাশুনিতে নাম্বারপ্লেট নিতে আসা শ্যামল ঘোষ ও একই অভিযোগ করেন।
আজ সোমবার থেকে কালেক্টরেট চত্তর থেকে মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট বিতরণ করা হবে। টাইগার আইটি নামের একটি বেসরকারি সংস্থা মোটারসাইকেলের নাম্বারপ্লেট বিতরণ করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখবর নিশ্চিত করেছেন বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। টাকা আদায়ের সাথে টাইগার আইটির কয়েকজন সদস্য জড়িত বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত: জনপ্রতিনিধির যাদুর বলে মোটরসাইকেল মালিককে গুনতে হতো এ টাকা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলতো নাম্বারপ্লেট বিতরণ। দিনে ৬০ থেকে ৭০টি ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট বিতরণের কথা জানিয়েছেন বিআরটিএ। এতে দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করতো দালালচক্র। চুল লম্বা বিরাটকার দেহের অধিকারী ওই ব্যক্তি দীপের কাছে হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে অগণিত মানুষকে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে নির্যাতন করা হতো বলে অনেকের অভিযোগ রয়েছে। মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট বিতরণকে কেন্দ্র করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ছিলো দালালদের অভয়ারণ্য। দালালদের কারণে এখানে সাধারণ মানুষও বিনোদনের স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিলেন।

Check Also

মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন প্রবাজপুর শাহী মসজিদ: সংস্কার না হওয়ায় ধ্বংসের আশঙ্কা, ৫০বিঘা জমি বে-দখলে, পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।