কলারোয়ায় ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি, আটক ১# ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) : কলারোয়ায় দশ স্কুল ছাত্রকে দিয়ে কাঠফাটা রোদের মধ্যে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্সুরেন্স, হেলমেটসহ যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করানো হচ্ছে।
গত পাঁচদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে পুলিশের দেওয়া এ দায়িত্ব ছাত্ররা পালন করছে। এতে তাদের লেখাপড়া লাটে ওঠার উপক্রম হয়েছে।
অন্যদিকে অবিভাবকদের অনুমতি না নিয়ে ছাত্রদের দিয়ে এসব কাজ করানো কতটুকু যুক্তিসঙ্গত, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
কলারোয়া জিকেএমকে মডেল পাইলট স্কুলের ছাত্র আপন, শাহরিয়ার ও আবির জানায়, ট্রাফিক সপ্তাহ শুরুর দিন থেকে তারা দশ ছাত্র থানা পুলিশের সঙ্গে যশোর-সাতক্ষীরা  সড়কে মোটরসাইকেল ও বাস, ট্রাকের ফিটনেস, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। গত শুক্রবারও তাদেরকে দিয়ে সকালে উপজেলার যুগীবাড়ি মোড় ও বিকেলে শেখ আমানুল্লাহ কলেজ মোড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
শনিবারও কাঠফাটা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে সকাল-বিকেল ডিউটি করানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের দিয়ে। এ কাজ করতে যেয়ে তাদের চারদিনে স্কুলের পড়া পিছিয়ে গেছে। ক্লান্ত শরীরে রাতে তারা পড়ার টেবিলেও বসতে পারছে না। তারা খুবই ক্লান্ত।
ছাত্ররা জানায়, তাদের সামনে দিয়ে অবৈধ নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করলেও পুলিশ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। তখন তাদের খারাপ লাগে।
প্রশ্নের জবাবে ছাত্ররা বলে, তারা দশজনই স্কাউটের সদস্য। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে তারা সারা দিন না খেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশকে সহায়তা করে যাচ্ছে।
এবিষয়ে কলারোয়া জিকেএমকে মডেল পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুর রবের সঙ্গে কথা হয় তার অফিসে। এসময় তিনি বলেন, ‘জানেন তো, এখন দেশ চালাচ্ছে পুলিশ। গত চার তারিখে থানার ওসি আমাকে ফোন করে বৃক্ষরোপণের জন্য দশজন স্কাউটের ছাত্র চাইলেন। আমি ছাত্রদের থানায় পাঠালাম। তারা এখনো পুলিশের সাথে কাজ করছে।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘অভিভাবকরা আর কী বলবে? পুলিশই সব।’
কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক কাজে স্কাউটদের কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে তাদের লেখাপড়ার বিষয়টা আগে খেয়াল রাখতে হবে। স্কুল না করে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা যদি অন্যভাবে পুষিয়ে নিতে না পারে তবে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবিভাবকরা জানান, নিরাপদ সড়কে দাবিতে শিশু আন্দোলন শেষ হয়েছে। সরকার দাবি মেনে নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরে গেছে। এ অবস্থায় অভিভাবকদের অনুমতি না নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ লেখাপড়া বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় পাঠাচ্ছে। এটা দুঃখজনক।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মারুফ আহম্মেদ জানান, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের পরামর্শ মতে স্কাউটের ছাত্রদের নিয়ে রাস্তায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আন্দোলনের সময় অভিভাবকরা কোথায় ছিল? এখন অবিভাবকরা রাগ করলে হবে কেনো? আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে দশজন স্টুডেন্ট চাইছি। তিনি শিফট করে না দিয়ে যদি একই স্টুডেন্ট প্রতিদিন পাঠান, তাতে তো আমার কিছু করার নেই।’

 

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : কলারোয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাইফুন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার ভোররাতে উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক তাইফুন যুগিখালী গ্রামের আব্দুল মান্নান দালালের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, গত ৫ আগস্ট গভীর রাতে একই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল দফাদারের ছেলে সোহাগ হোসেন (২৫), নুরে দফাদারের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন (২৪), অজিয়ারের ছেলে আব্দুল করিম (২৭), গোলাপের ছেলে শাহিন (২৬), আকাম দপ্তরির ছেলে শানারুল (২৮), মৃত সাত্তার শেখের ছেলে ছহিলউদ্দীন (২৫) ও আটক তাইফুন পাইকপাড়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ওসমানের বাড়িতে যান। এ সময় তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওসমানকে চোখ বেঁধে উঠিয়ে পাশের মাঠে নিয়ে যান। সেখানে তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। দিতে অস্বীকার করায় ওসমানকে তারা বেদম মারপিট করেন। একপর্যায়ে ওসমান ৩৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। পরে একই গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩৫ হাজার টাকা দিলে তারা ওসমানকে ছেড়ে দেয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার ভোররাতে ওই তাইফুনকে আটক করে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
ধরে নিয়ে যাওয়া ওসমান আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তিরা দূর থেকে আমারসহ পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। এতে আমরা পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মারুফ আহম্মেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাইফুন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যাচাই-বাছাই শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।