ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা ষড়যন্ত্রে শুধু জিয়াউর রহমানই নয়, খালেদা জিয়াও জড়িত। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। জাতির পিতার শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টার অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের দেশের উন্নয়ন সহ্য হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘যারা শিশুদের নিয়ে খেলতে চায়, তাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়, তারা বাংলাদেশের জনগণের ভবিষ্যৎকেই আসলে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়। আলোর পথে যাত্রায় বাধা দিতে চায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্ত্রী (খালেদা জিয়া) জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদের ভোট চুরির মাধ্যমে জাতীয় সংসদে জায়গা করে দেন। এর অর্থ কী দাঁড়ায়? জাতির পিতা হত্যা ষড়যন্ত্রে (১৫ আগস্ট) শুধু জিয়াউর রহমানই নয়, খালেদা জিয়াও জড়িত। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনিরা সব সময় খুনিই হয়। এরাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। কাজেই এদের হাতে দেশের ক্ষমতা গেলে দেশের কি উন্নতি হবে, দেশের মানুষ কি ন্যায়বিচার পাবে?
দেশে আর কোনো দিন খুনিদের রাজত্ব ফিরে না আসার ব্যাপারে দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আর কোনো দিন খুনিদের ক্ষমতায় আসতে দেবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিদের রাজত্ব এ দেশে আর আসবে না, আসতে দেওয়া হবে না। মুজিব আদর্শের প্রতিটি সৈনিককেই এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে চলতে হবে, কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’
জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে যত বড়ই হোক, কেউ যদি কোনো অন্যায় করে তার বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবেই। তিনি বলেন, ‘যারা বংশপরম্পরায় এই চক্রান্ত করে যাচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণকে বলব এদের সম্পর্কে আপনাদেরও সচেতন থাকতে হবে। কারণ, এরা বাংলাদেশের উন্নয়ন, মানুষের কল্যাণ, মানুষের ভালো দেখতে চায় না। শুধু নিজেরাই ভালো থাকতে চায়।’
জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি অন্যায়ের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। তাই তারা কখনো ন্যায়বিচার করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে কলঙ্কজনক দিন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে বাঙালি জাতি ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে উঠত, উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা পেত।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন এবং দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন আহকাম উল্লাহ। দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম স্মরণসভাটি পরিচালনা করেন।