ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন

# রাজনৈতিক দলের সাথে আর কোনো সংলাপ নয়
# নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল
ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: দিন তারিখ ঠিক না হলেও আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ ব্যাপারে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচনের তফসিল এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এটা ধরে কাজ করছি। বাকিটা কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের শতকরা ৮০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সচিব বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলাদা একটি কমিশন সভা হবে। সেখানে ৩০০ আসনের ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে কি না, ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত হয়েছে কি না, ব্যালট পেপারের জন্য যে কাগজের প্রয়োজন তা কেনা হয়েছে কি না, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থছাড় দেয়া হয়েছে কি না, নির্বাচনী সামগ্রী কেনার প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে আছে সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে রাজনৈতিক দলের আর কোনো সংলাপ অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা নেই। ইসি নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে। যে কারণে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করার মতো যথেষ্ট সময় ইসির হাতে নেই।
দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের মাঠ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সকল উপজেলায় নির্বাচন অফিসার দেওয়া হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে মাঠ কর্মকর্তাদের। সে অনুযায়ী কাজ করছে জেলা-উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা।
আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ সংসদ নির্বাচন হলে ২০১৯ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারই ২০২১ সালে পালন করবে বাংলাদেশের সুবর্ন জয়ন্তী। এ জন্য এখন থেকেই নানা ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে হবে।
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ১২ জানুয়ারি পুনরায় সরকার গঠন করে। প্রথম অধিবেশন বসে ২৯ জানুয়ারি। এ হিসেব অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবরের পর থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে কথা রয়েছে।
সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। বিধান অনুযায়ী নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেই হিসাবে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন করে। একই নিয়মেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ।
নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৮ দিন সময় হাতে রেখে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন দাখিলের জন্য ১০ থেকে ১২ দিন, যাচাই-বাছাই চার দিন, প্রত্যাহারের সময় সাত দিন ও প্রচারণার জন্য ১৫ দিন সময় দেয় ইসি। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ দিন সময় হাতে রেখেই তফসিল ঘোষণা করে থাকে। সেই হিসাবে আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করতে হবে

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।