বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা

ফিরোজ হোসেন,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বিদ্যুৎ সংকটে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা। গত তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে ও সিটিস্কানসহ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি। এর ফলে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রুগীরা। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যুৎ সংকট কাটাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
রোগীদের অভিযোগ, অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় জরুরী অপারেশন সেবা বন্ধ। এছাড়া সিটিস্ক্যান, এক্সরে মেশিন, ল্যাবসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতিও বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে। চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন এসব রুগীরা।
এদিকে, জেলা শহরের দুর দরান্ত থেকে অপারেশন করতে আসা অসহায় ও গরীব রোগিরা সদর হাসপাতালের দুরাবস্থা দেখে ফিরে যাচ্ছেন। সিজারিয়ান মা ও নবজাতক বাচ্চারা অসহনীয় গরমে তাদের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। দেখা দিচ্ছে নানাবিধ রোগ। এদিকে বিদ্যুতের পাশাপাশি পানি না থাকায় হাসপাতলে পরিবেশ দুষন দেখা দিয়েছে। নিচ থেকে পানি নিয়ে রোগিদের বাথরুম ও অন্যান্য কাজ সারতে হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন শেফালি খাতুনের স্বামী মহব্বত আলি জানান, গত তিনদিন আগে তার স্ত্রীকে সিজার করার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতল কর্তৃপক্ষ বলেন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুত নেই। তোমার স্ত্রীকে যদি সিজার করতে হয় তাহলে জেনারেটরে তেল কিনে দিতে হবে। আমি তেল কিনে দিলে তারপর ডাক্তারা আমার স্ত্রীকে সিজার করে।
সিদ্দিকুর রহমান নামে আর এক রুগীর স্বজন জানান, তার এক আত্মীয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতলে গত তিন দিন আগে ভর্তি হয়েছেন। এরপর থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুত ও পানি নেই।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে তিনি উর্দ্বতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ জামিল জানান, বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার জানিয়েও কোন ফল হয়নি। ৫০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার দিয়ে হাসপাতালের সব ইউনিট চালানো সম্ভব নয়। তাই আলাদা একটি সাবস্টেশন বসানোর দাবি এই চিকিৎসকের।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: তওহীদুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়ে যায়। সাতক্ষীরা সদর হাতপাতালের প্রয়োজন ১৫০ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফরমার। বিদ্যুত অফিসে বারবার বলা হলেও তারা ৫০ পাওয়ার কেভির বেশি ট্রান্সফরমা দিতে পারছে না। এ বিষয়ে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে ১৫০ পাওয়ার কেভি ট্রান্সফরমর চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমারটি পাওয়া গেলে অপারেশনসহ যাবতীয় কাজ করা যাবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, বর্তমানে সদর হাসপাতালে ২৫০/৩০০ জন রোগি ভর্তি আছে। দুর দরান্ত থেকে অপারেশন করতে আসা রোগিরা ফিরে যাচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালের অপারেশন আপাতত বন্ধ আছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো: ইফতেখার হোসেন জানান, রুগিদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৫০ কেভি পাওয়ারের একটি ট্রান্সফরমা লাগানো হয়েছে। নতুন ১৫০ কেভি ট্রান্সফরমারটি দুই একদিনে মধ্যে পাওয়া যাবে। নতুন ট্রান্সফরমারটি হাতে পেলে আগের মত অপারেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি জানান।##

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।