ক্রাইমবার্তা রিপোট: ৮০ বছর বয়সে থেমে গেল জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের প্রাণ-স্পন্দন। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জাতিসংঘ সূত্রকে উদ্ধৃত করে তার মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। কফি আনান ফাউন্ডেশনের তরফ থেকেও তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
১৯৩৮ সালে ঘানায় জন্ম নেওয়া কফি আনান জাতিসংঘের সপ্তম মহাসচিব ছিলেন। প্রথম আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ওই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কর্মী হিসেবে জাতিসংঘে যোগ দিয়ে তিনিই প্রথম সংস্থাটির শীর্ষ পদে আসীন হয়েছিলেন। আনান ফাউন্ডেশনের পক্ষে তার দুইজন ঘনিষ্ট সহকারী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরের একটি হাসপাতালে শনিবার প্রথম প্রহরে মারা যান তিনি। তবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি। জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা টুইটারে লিখেছে, আজ আমরা এক মহৎ প্রাণ, নেতা ও স্বপ্নদর্শী মানুষ জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানকে হারানোয় শোকাচ্ছন্ন।
আনানের মৃত্যুর খবর জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে কফি আনান ফাউন্ডেশন তাকে বিশ্ব-কূটনীতির সফল ব্যক্তি ও গভীর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আন্তর্জাতিকতাবাদী আখ্যা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়পরায়ন বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় জীবনভর সংগ্রাম করেছেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যেখানেই দুর্ভোগ বা মানবিক আর্তি, সেখানেই ছুটে গেছেন তিনি। গভীর সমবেদনা ও সমানুভূতিতে হৃদয় ছুঁয়েছেন বহু মানুষের। নিজের বদলে অন্যদের কথাই আগে ভেবেছেন তিনি, যা করেছেন তার সবকিছুই দ্যুতি ছড়িয়েছে সত্যিকারের মমতা, আন্তরিকতা আর মেধার।’
২০০৭ সালে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক নেতাদের গ্রুপ দ্য এলডারস’র প্রতিষ্ঠা হলে এর সদস্য হন কফি আনান। ২০১৩ সালে ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান হন তিনি। ২০০১ সালে জাতিসংঘ এবং কফি আনান যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালে মহাসচিবের দায়িত্ব ছাড়ার পর সিরিয়া সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এছাড়া রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার গঠিত কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আনান কমিশন নামে পরিচিতি পাওয়া ওই কমিশন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ৮৮টি সুপারিশ করে। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে আনান কমিশনের সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ