বুধহাটার রেনুবালা ও পুত্র রতন পরামানিকের
বসবাস মুরগির কোঠার মত ঘরে
অাশাশুনি প্রতিনিধিঃ বর্তমান সময়ে রেনুবালা পরামানিক ও তার পুত্র প্রতিবন্ধী রতন পরামানিক মুরগির কোঠার মত ছোট্ট ঘরে বসবাস করে জীবন যাপন করছেন। কষ্টকর ও ভীতিকর পরিবেশে বসবাস করলেও তাদের পাশে কেউ থাকেনি।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের মহেশ^রকাটি গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়ী বাঁধের স্লোবে মুরগির কোঠার মত ছোট ছোট দু’টি ঘরে মানুষ বসবাস করতে পারে- মানুষ ভাবতে পারেনা। রেনুবালার (৭৮) স্বামী মাখম পরামানিক ৬২ বছর আগে মারা গেছেন। তাদের পুত্র রতনের বয়স তখন ৪ বছর। সেই থেকে আজ ৬২ বছর অসহায় পরিবারটি পাউবো’র ভেড়ীর পাশে বসবাস করে আসছেন। তাদের আয়ের উৎস ছিল মাছ ধরা। ঘর বাধার মত সামর্থ তাদের নেই। তাই ভিত ছাড়া কোন রকমে দু’-আড়াই হাত উচু করে খুটি পুতে, নাড়া/গোলপাতা দিয়ে ছেয়ে হাঁস-মুরগি থাকার ঘরের মত করে দু’টি ঘর বেধেছেন তারা। যে ঘরে বসে উপুড় হয়ে ঢুকতে হয়। বের হতে গেলে একই ভাবে বেরিয়ে আসতে হয়। ঘরের মধ্যে কোন রকমে বসে থাকা যায়; দাঁড়ানোর কোন সুয্গো নেই। ঘরের সাথেই আছে ছোট্ট হাঁসমুরগির কোঠা। যেখানে হাঁসমুরগি থাকে। হাঁসমুরগির ঘরের সাথেই তাদের বসবাস। সরকারি ভাবে কিংবা বিভিন্ন এনজিও যুগের পরে যুগ ধরে অসহায় গরীব মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে এসেছে। দুঃখের কথা হলো এহেন চরম বিপন্ন দু’টি জীবনের প্রতি তাদের নজর আসেনি। ইউনিয়ন পরিষদের দয়া-দাক্ষিণ্যে ১৫/১৬ বছর আগে থেকে রেনুবালা একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেয়েছেন। প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে তিনি পাচ্ছেন। বয়ঃবৃদ্ধ রেণুবালাকে এই ৫০০ টাকার মধ্যে জীবন-যাপনের সকল খরচ সমালাতে হয়। বর্ষা কালে ঘরের মধ্যে পানির স্পর্শ থাকে, রৌদ্র গরমে করুন পরিণতি আর ঝড়বাতাসের কবলে হাতের মুঠোর জীবন নিয়ে মাটি আকড়ে থাকতে হয় তাদের। সাপের আনাগোনা, ইঁদুরের উপদ্রবসহ অনেক বিড়ম্বনা তাদেরকে সহ্য করতে হয়। রেণুবালা ও প্রতিবন্ধী রতন কাঁদতে কাঁদতে মনের আকুতি প্রকাশ করে বলেন, আর কত কষ্টে থাকলে তারা ঘরবাড়ি ছাড়া মানবেতর জীবন যাপনের হাত থেকে রেহাই পাবেন? নাকি বাকি জীবনটাই এভাবে কাটাতে হবে? জন প্রতিনিধি, মানবতার সেবায় নিয়োজিত এনজিও ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে এলাকাবাসীর দাবী অসহায় মা-পুত্রকে বেঁচে থাকার মত বসবাসের ঠিকানা ভিক্ষে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।