তরিকুল ইসলাম তারেক, যশোর: পবিত্র ঈদ-উল আযহা আসন্ন। তাই যশোর জেলার শহর নগর গ্রাম-গঞ্জের পশু হাটগুলোতে কুরবানির গরু-ছাগল বেচা-কেনা জমে উঠেছে।
এসব হাটে মধ্যবিত্ত ক্রেতার সংখ্যা বেশি। সাধ্যের মধ্যে পচ্ছন্দের পশুটি কিনতে চেস্টা করছেন ক্রেতারা। গ্রামের হাট গুলোতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতা পদাচরণ বেশি থাকায় মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদাও বেশি। তবে এ সুযোগ কাজে লাগাতে বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছেন বুঝে শুনে। বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকছে বলে বাজারে আসা ক্রেতারা সিদ্ধান্ত নিতে দেরিও করছে। যাচাই করছেন পশুর দাম। ফলে মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের পদাচরণে গ্রাম-গঞ্জের হাটগুলোতো জমে উঠেছে বেচা কেনা। তবে কয়েকটি দিন বাকি থাকায় অনেক বিক্রেতা তার পশুর দাম বেশি হাকাছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।
মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সাধ্যমত পশু কুরবানি করে থাকেন মুসলমানরা। আর তাই পশু কিনতে তৎপর ক্রেতারা। হাটঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে এক উৎসবের আমেজ। বর্তমানে যশোর সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে না বললেই চলে।
এ কারনে যশোরে বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েক শত গরু ও ছাগল খামার। এছাড়াও নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কুরবানি বাজার ধরার জন্য অনেকেই পশু পালন করছেন। কুরবানিকে সামনে রেখে এ সব খামারে পশু মোটাজাতা করণ করা হয়েছে।
যশোর প্রাণিসম্পদ অফিস জানিয়েছে, যশোরের আট উপজেলায় ছোট বড় নয় হাজার খামার রয়েছে। এ খামারে কুরবানি ঈদ উপলক্ষে ৩০ হাজার পাঁচশ গরু ও ২৭ হাজার ছাগলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে খামারগুলোতে প্রায় ৪০ হাজার গরু ও ৩০ হাজার ছাগল পালন করা হয়েছে।
যশোরের কেশবপুরের আসলাম আলী গত সোমবার মনিরামপুরের রাজগঞ্জ হাটে দুটি গরু তুলেছিলেন। দেড় বছর ধরে তিনি এ গরু দুটি লালন-পালনের করেছেন। নিজ ক্ষেতের বিছালী ও বাড়ির নষ্ট ভাত ফ্যান, কুড়ো খাইয়ে এদের মোটাতাজা করা হয়েছে।
গরু দুটি তিনি এক লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি বিক্রি করবেন। তিনি জানান ক্রেতা আসছে, তবে দাম কম বলছে। তাই বসে আছি। আজ বিক্রি না করতে পারলে আগামী হাটে বিক্রি করবে বলে জানান। তবে এখনই কম দামে বিক্রি করবেন না। তিনি জানান বাজারে ৪৫ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা দামের গরু চাহিদা বেশি।
যশোরের মনিরামপুরে পার খাজুরা গ্রামের কাশেম আলী হাটে দুটি ছাগল নিয়েছিলেন। তিনি জানান, ছাগল দুটির দাম হচ্ছে ২৭ হাজার টাকা। ৩০ হাজার টাকা হলে তিনি বিক্রি করে দিবেন। তিনি জানান, এক বছর আগে ছাগল দুটি তিনি সাত হাজার টাকা দিয়ে কিনে ছিলেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হোসেন গাজী বলেন, এলাকা থেকে দুটি গরু ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনে রাজগঞ্জ হাটে নিয়ে এসেছি। তিনি বলেন, গরু ছোট হওয়ায় ক্রেতা আছে। এখন দাম হচ্ছে জোড়া ৯০ হাজার টাকা। ক্রেতা আলী হোসেন বলেন, বাজারের পর্যাপ্ত গরু উঠেছে। তবে দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। দেখে শুনে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে একটি গরু কিনবেন বলে জানান তিনি।
হয়রত আলী নামের এক ব্যাপারি গরু তিনটি কিনেছেন। ঢাকার কুরবানি পশু হাটে বিক্রি করবেন। ব্যাপারিদের কয়েকজন জানালেন তাদের আশংকার কথা। তারা জানান প্রতি বছর গরু নিয়ে ঢাকার কুরবানি পশুর হাটগুলোতে গরু তোলার কয়েকদিন পর ভারতীয় গরুতে সয়লাব হয়ে যায়।
গত কয়েক বছর লোকসানের পর অনেকেই পথে বসেছেন। হাট ইজারাদার জানায়, এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষি নিভর্র। কৃষি কাজের সাথে সাথে প্রায় অধিকাংশ বাড়িতে এক-দুইটি গরু ও ছাগল পালেন। কুরবানীর সময় তারা তা বিক্রি করে থাকেন। বাজার পর্যাপ্ত গরু ও ছাগল উঠছে। বেচা কোনা মোটামুটি হচ্ছে।#
Check Also
সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন
ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা: ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …