আকবর হোসেন,তালা: তালা উপজেলার তালার ৪ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় হাসপাতাল চলছে অনিময়-অব্যবস্থাপনায় ৩৪ জন ডাক্তারের পদের মধ্যে ডাক্তার আছে ২ জন ।চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন শত শত রোগী তালা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার প্রতি আস্তা হারিয়ে ছুটছেন স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিক অথবা খুলনা- সাতক্ষীরায়।
সরজমিনে রবিবার ২৭ আগষ্ট হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,চরগ্রামের ময়েজ উদ্দিন তার মুমূর্ষ স্ত্রীকে নিয়ে জরুরী বিভাগের সামনে কিংকর্তব্য বিমুঢ় ছুটাছুটি করছেন, অনেকক্ষন পর ডা. রাজীব আসলেন, ব্যবস্থা পত্রের সাথেই খুলনা অথবা সাতক্ষীরায় নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। মাছিয়াড়া গ্রামের শহিদুল গাজী তার শিশু কন্যাকে নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখানোর জন্য, কিন্তু সকাল থেকে অপেক্ষা করে ডাক্তার না পেয়ে সাতক্ষীরা উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। তালা আটারই গ্রাম থেকে এসেছেন জুলেখা বিবি তার সন্তান সম্ভবনা কন্যাকে নিয়ে, কিন্তু ডাক্তার না থাকায় প্রাইভেট ক্লিনিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ৩নং বেডে ভর্তি রোগীর অভিভাবক খালেদার অভিযোগ বাথরুমে নোংরা আবর্জনায় ভর্তি ব্যবহারে অযোগ্য পড়েছে। ১৫ নং বেডের রোগী মুক্তিযোদ্ধা কন্যা পারুল বেগমের অভিযোগ অসুস্থ্য অবস্থায় সকালে ভর্তি হয়েছি , নার্সরা একটি স্যালাইন দিয়েছে. এখনও (সন্ধ্যা পর্যন্ত)কোন ডাক্তার আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জরুরী বিভাগের একজন ষ্টাফ জানালেন, ডাক্তার সংকটের কারণে এখানে ছোট-খাট ড্রেসিং ছাড়া আর কিছুই সম্ভব নয়। তালা উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য সরকারি স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে রয়েছেন মাত্র ২ জন ডাক্তার। ফলে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জনবল সংকটে অকেজো পড়ে নষ্ট হচ্ছে এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রা¯েœাগ্রাম, জেনারেটর সহ কোটি কোটি টাকার অপারেশন থিয়েটার সরঞ্জাম। অপরদিকে তালা হাসপাতালে স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় কর্মচারীর দাপটে অসহায় ডাক্তাররা বেশীদিন টিকতে পারেন না বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে, তালা উপজেলা সদরের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বর্তমানে চরম ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা মারাত্বক বিঘিœত হচ্ছে। তালা হাসপাতালে ৩৪ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও আছেন ৩ জন, তার মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জেলা সদরে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় বর্তমানে ২ জন ডাক্তার কোন রকম টেনে হিঁচড়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ডাক্তার নেই, ঔযুধ নেই, নিম্ম মানের খাবার পরিবেশন, নোংরা শৌচাগার, পানি নেই, লাইট নেই, ফ্যান নষ্ট ইত্যাদি নিত্যনৈমত্তিক অভিযোগের সাথে যোগ হয়েছে আরও এটি অভিযোগ, তা হলো সরকারী এ্যাম্বুলেন্স এ ২/৩ গুন বেশী ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যে কারণে জটিল রোগী আসলেই প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স এ খুলনা মেডিকেল কলেজ অথবা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিতে হয়। এভাবেই চলছে বর্তমানে তালা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি।
তালা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কুদরত-ই-খূদা জানান, মাত্র ২ জন ডাক্তার দিয়ে কিভাবে সম্ভব একটা হাসপাতাল চালানো , তবে ডাক্তার সল্পতার কারণে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা বিঘœ হলেও, আমরা যথাসাধ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
Check Also
ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়
দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …