নিজস্ব প্রতিনিধি: জনগণের ভোটে জিতেও বিপদের দিনে কেন সেই ভোটারদের গণরোষের স্বীকার হয়েছেন বহুল আলোচিত এসএম রেজাউল ইসলাম মেম্বর। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা চাল আত্মসাতের মামলাটিও গতকাল দুদকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, একজন মাথা মোটা জনপ্রতিনিধির কথিত জামাতা পরিচয় দিয়ে গায়ের জোরে এলাকাবাসির ঘের দখল, এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়, পুলিশ দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, এলাকার স্থায়ীন উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদান, চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জনগণের মালামাল দেওয়ার নাম করে আত্মসাৎ, সংখ্যালঘু পরিবারকে বিদ্যুতের লাইন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করে এতে এলাকাবাসি অতিষ্ট করে তুরছিল এই রেজাউল ইসলাম। নিজের বাড়ির কাজের বুয়ার উপর নিয়মিত নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নির্বাচনের সময় তার হয়ে যারা কাজ করেছিল তাদের অবমূল্যায়ন। নদীর চর ইজারা নিয়ে স্থানীয়রা চলতো কিন্তু সদর এমপির বলে সেগুলো তাদের কাছ কেড়ে নেয়। স্ত্রী ও ছেলেকে দিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ও স্থানীয় ব্যক্তিদের অবমূল্যয়ের কারণে সবাই তার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল।
গরীবের চাল চুরি করে ধানের গোলার মধ্যে পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না বহুল আলোচিত ইউপি মেম্বর জনপ্রতিনিধির কথিত জামাতা রেজাউল ইসলামের। তিনি জেলা কৃষকলীগের কথিত হেবিওয়েট নেতাও বটে। ত্রাণের চাল চুরির পর জনরোষে শিকার হয়ে তিনি একটি ধানের গোলার মধ্যে পালিয়ে গণধোলাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানায়, ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র ১৩ বস্তা চাল জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আক্তার হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিকু একাধিক ব্যক্তি জানানা, মাথা মোটা এক জনপ্রতিনিধির কথিত জামাতা হওয়ার কারণে এলাকাবাসি তার উপর খেপা ছিলো সে কারণে তার জনরোষ দেখা দেয়।
জানা গেছে, রেজাউল মেম্বর স্থানীয় ৩০ জন সংখ্যালঘুর সাথে ঘের ব্যবসায় শুরু করেন। পরবর্তীতে সদর এমপির বলে সকলকে গায়ের জোরে সরিয়ে নিজেই দখল করে নেয়।
এদিকে এলাকাবাসি আরো জানান, ইতোপূর্বে এসএম রেজাউল ইসলাম সদরের একজন জনপ্রতিনিধির জামাই পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ও ব্যক্তির নিকট থেকে চাঁদাবাজি করে আসছিল। এছাড়া ওই জনপ্রতিনিধির বিশেষ কোটায় বরাদ্দ থেকে এলাকার শ্মশানঘাট, মন্দির, ভূয়া ক্লাবসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কারের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। এসব টাকা দিয়ে সে টিন শেডের ঘরে এসি লাগিয়েছে। ঘনঘন নিজের এবং ছেলের মটরসাইকেলের মডেল পরিবর্তন করে লর্ড স্টাইলে চলাফেরা করেন। সূত্র আরো জানায়, তার স্ত্রী তহমিনা খাতুন মনি মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী পরিচয় দিয়ে এলাকায় ব্যাপক দাপট দেখান। তার দাপটে এলাকাবাসির টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। তার ছেলে ফজলে রাব্বি শাওন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার দাপটেও এলাকাবাসি থরথর। একজন জনপ্রতিনিধির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসএম রেজাউল ইসলামও তার স্ত্রী-সন্তানেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। চাঁদাবাজি দুর্নীতির মাধ্যমে চালায় নানা অপকর্ম। অপর এক সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বেতনার তীরে সরকারি জমি ইজারা নিয়ে পরবর্তীতে কাগজ টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি করে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করেছেন। এতে বেতনার চর গিলে খেয়েছে মেম্বর রেজাউল ইসলামসহ অন্যরা।