পুলিশের উপর হামলার মামলায় নাটোরে আওয়ামী লীগের ৪৫ নেতাকর্মিকে জেল হাজতে

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম:নাটোর সংবাদদাতা:
নাটোরের গুরুদাসপুরে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় প্রবেশ নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশের উপর হামলার মামলায় জেলা পরিষদের এক সদস্যসহ গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ৪৫ নেতাকর্মিকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। বুধবার দুপুরে আসামীরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনাদেশ বর্ধিত করার আবেদন করলে নাটোরের গুরুদাসপুর আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোমিনুল ইসলাম তাদের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ মে গুরুদাসপুর উপজেলা সমন্বয় সভার দিন ধার্য্যছিল। সভায় বিশ্খৃংলা হতে পারে এমন আগাম সর্তক বানী পেয়ে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনও রাখা হয়। ওই সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসসহ দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা এবং তার সমর্থকরা প্রায় দুই শতাধিক মোটর সাইকেল নিয়ে উপজেলা চত্বরে এসে শো-ডাউন দিতে থাকে। এসময় পুলিশ তাদের নিষেধ করলেও তারা তা শোনেননি। এক পর্যায়ে তাদের বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এসময় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পুলিশ লাঠি চার্জ সহ ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিন পাঁচ পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ১২ মে শুক্রবার সকালে গুরুদাসপুর থানার এস আই সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লাসহ আওয়ামীলীগের ৬৭জন নেতাকর্মির নাম উল্লেখসহ আরো ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামীরা এতদিন জামিনে ছিল। শনিবার ওই মামলায় পুনরায় হাজির হয়ে জামিনাদেশ বর্ধিত করার আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে। এতে গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও গুরুদাসপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক জেলা পরিষদ সদস্য মেহেদী হাসানসহ ৪৫ জনকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয় আদালত। তবে মামলার প্রধান আসামী পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। বিকালে আসামীদের নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে গুরুদাসপুরের কোর্ট জিআরও শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।

নাটোরে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ
নাটোর সংবাদদাতা
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় হত্যার ভয় দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী (১৩) কে ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার চক গোয়াশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পুলিশ হেফাজতে ছাত্রীকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা কাজল (২৭) নামের এক যুবককে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত কাজল গালিমপুর গ্রামের সালাম আলীর ছেলে। ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক। মঙ্গলবার সকাল ৬ টার দিকে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে ভাড়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। অপরদিকে সকাল ৯টার দিকে নিজের মেয়েকে বাড়িতে রেখে তার স্ত্রী এনজিও’র ঋণের কিস্তি দিতে একই গ্রামের জিন্নাতের বাড়িতে যান। এসময় কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে কাজল তাদের বাড়িতে এসে তার মেয়েকে হত্যার ভয় দেখিয়ে গলা চেপে ধরে জোর পুর্বক ধর্ষন করে। পরে ওই ছাত্রীর মা সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়ি ফিরে মেয়ের মুখে ঘটনা জানতে পারেন। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা মঙ্গলবার রাতে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ রাতেই মামলাটি রেকর্ড করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাকিব জানান, মঙ্গলবার রাতে মামলার পর থেকেই ছাত্রীকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। পরদিন বুধবার সকালে পুলিশী হেফাজতে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পরে আদালতে ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামী গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে।

নাটোরে গোপনে বাল্যবিয়ে কনের বাবাসহ তিন জনের কারাদন্ড

নাটোর সংবাদদাতা
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় গোপনে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত কনের বাবাসহ তিনজনকে কারাদন্ড দিয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন বানুর আদালত এ সাজা দেন। উপজেলার তমালতলা কাজিরচক মালঞ্চি গ্রামের মাসুদ রানার নাবালিকা মেয়ে তমালতলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মাসুদা খাতুন (১৪) এর বিয়ে পরিবারের লোকজন একই উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে হযরত আলীর সাথে ঠিক করে। সোমবার এ বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ওই দিন ইউএনও নাসরিন বানু গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন। সে সময় কনের বাবা বয়স পুর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে প্রশাসনের ওই নির্দেশকে উপেক্ষা করে একই দিন সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী যোগীপাড়া গ্রামে শামীম রেজার বাড়িতে কনের চাচা উজ্জল হোসেন বিয়ে পড়িয়ে দেন। পরদিন মঙ্গলবার এ খবর জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন গ্রাম পুলিশ নিয়ে এক অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কনের বাবা মাসুদ রানা (৩৭) ও চাচা উজ্জল হোসেন (২৮) কে ১৫ দিন করে এবং বাড়ির মালিক শামীম রেজা (২৭) কে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে।

 

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।