বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতাতেই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী :আমাদের রাজনীতি জনকল্যাণে, ভোটের জন্য নয়

আমাদের রাজনীতি জনকল্যাণে, ভোটের জন্য নয়: প্রধানমন্ত্রী

ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: বাসস)আওয়ামী লীগের রাজনীতি জনগণের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,  ‘আমাদের রাজনীতি জনকল্যাণের জন্য, ভোটের জন্য নয়। ক্ষমতা আমাদের কাছে কোনও ভোগের বস্তু নয়, এটা আমাদের দায়িত্ব। জাতির পিতা সে শিক্ষাই দিয়েছেন।’ বুধবার (২৯ আগস্ট) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী ৮ জেলার ২০ উপজেলায় কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট দেওয়া না দেওয়া এটা জনগণের অধিকার। কিন্তু জনসেবা করবো, জনগণকে একটু সুখ শান্তি দেবো, তাদের রোগে চিকিৎসা দেবো, তাদের একটু উন্নত জীবন দেবো, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো—এটা তো রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আমাদের অঙ্গীকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কী অদ্ভুত আমাদের দেশের মানুষের চরিত্র যে বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০১ সালের পর ক্ষমতায় এসেই এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিলো। শুধু এই একটা অজুহাতে যে এই ক্লিনিকে যারা কাজ করবে এবং যারা স্বাস্থ্যসেবা পাবে, তারা সব নৌকায় ভোট দেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি, ক্ষমতায় এলো বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা ক্ষমতায় এসেই এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করলো।’

স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্যই জাতির পিতা স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে প্রতিটি গ্রামে অন্তত ১০ শয্যার একটি করে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই স্বাস্থ্যসেবা আধুনিকায়নের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ২০ উপজেলার কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। সূত্র: বাসস

——————০——————–

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই ধরনের জঘন্য হামলা সংঘটিত হতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। তাদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই এই হামলা হয়েছিল। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ ধরনের হামলা ঘটতে পারে না।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহৃত আর্জেজ গ্রেনেড সেখানে ব্যবহার হয়েছিল। কারণ, আওয়ামী লীগকে একবারে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াই এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল। ২১ আগস্ট সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সভা করতে গিয়ে সেখানে গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে নিহত হয়েছিলেন আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী এবং দুইজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। আহত হয়েছিল শত শত নেতাকর্মী।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফুলের তোড়া দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে আগত হিন্দু পুরোহিত ও মহারাজসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন

প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে হিন্দু নেতারাশেখ হাসিনা বলেন, শুধু ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাই নয়, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ বহু ঘটনাই সে সময় ঘটেছে।

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা সে অবস্থা থেকে দেশকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, যেখানে সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে তাদের ধর্ম কর্ম করতে পারছে। আমরা এমন একটা অবস্থায় দেশকে আনতে পেরেছি যেখানে প্রতিটি উৎসবই আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে। এদেশে আর কেউ যেন কোনও দিন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তাঁর সরকার ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমঅধিকারে বিশ্বাসী উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও নিজেদের অধিকার নিয়ে চলবেন। কারণ, এই দেশটা আপনাদেরও।’
তিনি বলেন, স্বাধীনতারও মূল লক্ষ্য ছিল সকল ধর্মের মানুষ এদেশে তার সমান অধিকার নিয়ে বাঁচবে। এজন্যই জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলে রক্ত দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা এনেছিল।
প্রধানমন্ত্রী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালনের জন্যই শ্রী কৃষ্ণ এ ধরায় এসেছিলেন। সব ধর্মেরও মূল কথা ওই একই, মানুষের কল্যাণ করা।’
আগামী ২ সেপ্টেম্বর শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন বা জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপিত হবে। খবর বাসস।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।