রাইমবার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ বর্তমান সরকারের অবসান ঘটানোর জন্য বাংলাদেশের মানুষ আজ প্রস্তুত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য বেড়ে সামনের দিকে যাচ্ছে। এখন সরকারের ভেতর ভয় ঢুকে গেছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইয়ুথ ফোরামের আয়োজনে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, জাতীয় সংকট সমাধানে একমাত্র পথ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি মন্তব্য করেন।
মওদুদ বলেন, দেশের মধ্যে যারাই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান, তারা আজ ঐক্যবদ্ধ হওয়া শুরু করেছে। একটি জাতীয় ঐক্য হবে। কারণ আমরা গুম দেখতে চাই না। হত্যা, অপহরণ দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, যখন কোটা আন্দোলন হল সবাই বলল খুব ভালো। সরকারও বলল ভালো। দু-চার দিন যাওয়ার পর তাদের ওপর সরকার চড়াও হল। গ্রেফতার করা শুরু করল। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনেও একই অবস্থা হল।
‘আমার ভয় হয়, কারণ কামাল হোসেনরা যখন জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনা শুরু করল, সরকার বলল ভালো। গণতন্ত্রের জন্য ভালো আলোচনা। কিন্তু এখন ঐক্য বেড়ে সামনের দিকে যাচ্ছে। এখন সরকারের ভেতর ভয় ঢুকে গেছে’, মন্তব্য মওদুদের।
তিনি আরও বলেন, সামনের দিনে যখন এই ঐক্য জনমত তৈরি করবে, তখন হয়তো এই সরকারই সবার আগে আঘাত হানার চেষ্টা করবে। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরতদের যেভাবে আঘাত করেছে, গ্রেফতার করেছে; সেভাবে আঘাত ও গ্রেফতার করবে। কিন্তু এবার আর তা পারবে না।
সরকারের উদ্দেশ্যে মওদুদ বলেন, নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, তত এটা নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু যতই আরপিও সংশোধন করুন, আর মিথ্যাচার করুন, এবার আর অত্যাচার করতে পারবেন না। বাংলাদেশের মানুষ আজকে প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অবসান ঘটানোর জন্য।
তার মতে, সামনে জাতীয় ঐক্য হবে, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে এবং সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পাবে। এখন বাংলাদেশে একটি মাত্র ইস্যু। এখানে মানুষের স্বাধীনতা নেই, কথা বলার অধিকার নেই, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। এগুলো ফিরিয়ে আনা এখন একমাত্র কাজ।
ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে দেশে ব্যাংকের টাকা হ্যাকিং করা যায়, সে দেশে নির্বাচনে ভোটগ্রহণে মেশিন ব্যবহার করা নিয়ে কোনোভাবেই আস্থা নেই জনগণের। এই মেশিন কারা নিয়ন্ত্রণ করবে। এই নির্বাচন কমিশন, যাদের ওপর আমাদের আস্থা নেই। এই জন্য নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের এই সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করি।
‘ব্যালটে ভোট হলে তাতে সমস্যা দেখা দিলে পুনরায় গণনা করা যাবে। কিন্তু ইভিএমে সমস্যা দেখা দিলে পুনরায় গণনার কোনো সুযোগ নেই। হ্যাকিং হলেও বোঝার উপায় নেই,’ বলেন বিএনপির এ প্রবীণ নেতা।
সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্ব ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নোয়াখালী বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকী, জাতীয় নাগরিক মঞ্চের সভাপতি ইসমাইল তালুকদার খোকন প্রমুখ।