ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে গুম রয়েছেন ৪৩৫ জন। এদের মধ্যে মাত্র একজনের বিষয়ে তদন্ত এগিয়েছে। তবে এ মামলায় সুপ্রিমকোর্টের চূড়ান্ত রায় এখনও আটকে রয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি)।
আগামী সেপ্টেম্বরে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৩৯তম নিয়মিত অধিবেশনে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এশিয়ার গুম ও নিখোঁজ পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে হংকংভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি।
৩০ আগস্ট বিশ্ব গুম দিবস। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রতিবেদন শুরু করে এএলআরসি। এতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের মেয়াদে ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ৪৩৫ জনকে গুম করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।
লোকজনকে তুলে নেয়া ও গুমের সঙ্গে জড়িত হিসেবে ডিবি, গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমস ইউনিট (সিটিটিসিইউ) ও র্যাবের নাম উঠে এসেছে। এএলআরসি আরও বলেছে, নাগরিকদের তুলে নেয়া ও গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।
নিখোঁজ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ বা মাস পরে এক-চতুর্থাংশ মানুষকে পাওয়া যাচ্ছে বন্দি অবস্থায়। তাদের বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে নানা রকম বানোয়াট ফৌজদারি অভিযোগ। এ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে যারা ঘরে ফিরেছেন, তারা মুখ খুলছেন না।
এএলআরসি বলছে, পুলিশ স্টেশন অথবা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যেসব অভিযোগ জমা পড়ে তার তদন্ত করে না পুলিশ। তবে ২০১৫ সালে সাতজন মানুষ গুমের একটি ঘটনায় তদন্ত করেছে তারা। ফলে গত ১০ বছরে এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মাত্র একটি ঘটনায় বিচার হয়েছে। তবে এ মামলায় সুপ্রিমকোর্টের চূড়ান্ত রায় এখনও আটকে রয়েছে।
তারা জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছিল। পরে সেই গুমের শিকার ব্যক্তিদের মৃতদেহ ভেসে উঠেছিল।
এএলআরসি’র প্রতিবেদনে আর বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে প্রায় ১০টি ফৌজদারি মামলা বা হাবিয়াস করপাস রিট জমা পড়েছে। সুনির্দিষ্ট রিটে হাইকোর্ট রুল দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ওদিকে গুমের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস। তবে ২০০৯ সাল থেকে যেসব মানুষ অপহৃত হয়েছেন, তারা কোথায় আছেন তা কেউ জানেন না। সেইসব মানুষকে হাজির করার জন্য রাষ্ট্রীয় কোনো এজেন্সিকে কখনও কোনো নির্দেশও দেননি সুপ্রিমকোর্ট।