ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ দেশের ক্রিকেটের উন্নতির সাথে সাথে ক্রিকেটারদের কদর বেড়েছে। ক্রিকেটাররা রীতিমতো স্টারে পরিণত হয়েছেন। অনেকেই জাতীয় দলে কিছুদিন খেলেই হয়ে যাচ্ছেন কোটি টাকার মালিক। হঠাৎ করে এত অর্থের মালিক হওয়ায় তারা জড়িয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাতেগোনা কিছু ক্রিকেটারদের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে দেশের ক্রিকেট। যেসব ক্রিকেটারের কারণে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
রুবেল হোসেনকে দিয়ে শুরু। সবশেষ সংযোজন ২২ বছর বয়সি মোসাদ্দেক হোসেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও যৌতুক দাবির মামলা করেছেন তার স্ত্রী। এ পর্যন্ত তিনজন ক্রিকেটার জেলও খেটেছেন। এখন একনজরে দেখে নেয়া যাক এসব ক্রিকেটারদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডগুলো :
রুবেল হোসেন
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এই পেসারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী। অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। মামলার জের ধরে জেলে যেতে হয় রুবেলকে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে অংশ নিতে দেশ ছাড়ার আগে তাকে আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছিল। পরে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পান রুবেল।
আরাফাত সানি
নাসরিন সুলতানা নামে এক নারী ২০১৭ সালে আরাফাত সানির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেন। ওই তরুণীর দাবি, ২০১৪ সালে সানির সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। পরবর্তীতে সানি আরেকজনের সঙ্গে সংসার শুরু করেন। একসময় সানি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে নাসরিনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তাকে পাঠান বলে অভিযোগ তার। সেসব ছবি অন্তর্জালে ছড়িয়ে দেবারও নাকি হুমকি দিয়েছিলেন সানি। এই ঘটনায় সানি গ্রেফতার হয়ে ৫৩ দিন কারাগারে ছিলেন।
শাহাদাত হোসেন
শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় ২০১৫ সালে প্রায় দুইমাস জেলে ছিলেন এই পেসার। পরে ওই গৃহকর্মীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হলে মামলা থেকে মুক্তি পান তিনি। শাহাদাত ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হলে প্রথমে তারা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। একমাস পর পুলিশ শাহাদাতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করলে পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলেন শাহাদাত। কিন্তু আদালত জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ শহীদ
জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে এই পেসার অন্য মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে অভিযোগ করেছিলেন শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার। তিনি বলেন, শহীদ নাকি একবার তাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতেও চেয়েছিলেন। এসব ঘটনায় মামলা করার পরিকল্পনার কথা জানালে ভয়ে আবার সংসার শুরু করেছেন শহীদ।
সাব্বির আহমেদ
২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলার সময় চট্টগ্রামে নিজের হোটেল কক্ষে ‘নারী অতিথি’ নিয়ে রাত্রিযাপন করার অপরাধে সাব্বিরকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় লিগের ম্যাচ চলাকালীন এক কিশোর দর্শককে পিটিয়ে আবারও বোর্ডের আদালতে হাজির হতে হয়েছিল সাব্বিরকে। সবশেষ কিছুদিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলার সময় ফেসবুকে দুই সমর্থককে অকথ্য গালিগালাজ করেন তিনি।
আল আমিন হোসেন
চট্টগ্রামে হোটেল কক্ষে ‘নারী অতিথি’ নিয়ে যাওয়ায় আল আমিনকেও জরিমানা করা হয়েছিল। এছাড়া ‘গুরুতর শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে’ জড়িয়ে পড়ায় ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল তাকে।
নাসির হোসেন
সম্প্রতি নাসির হোসেনের সাথে এক তরুণীর ফোন কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। ঐ তরুণী নিজেকে নাসিরের বান্ধবী পরিচয় দিয়েছেন। এরপর সেই তরুণী ফেসবুক লাইভে এসেও নাসিরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আনেন।
মোসাদ্দেক হোসেন
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির মামলা করেন স্ত্রী সামিয়া শারমীন। এতে উল্লেখ করা হয়, ছয় বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও সেটি গোপন রাখেন মোসাদ্দেক। জাতীয় দলে সুযোগ পাবার পর অন্য মেয়েদের সঙ্গে মোসাদ্দেক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ তার স্ত্রীর। তবে মোসাদ্দেকের দাবি, বনিবনা না হওয়ায় দিন দশেক আগেই সামিয়াকে তালাক দিয়েছেন তিনি।