নির্বাচনে জনগনের ইচ্ছার প্রতিফলন চায় যুক্তরাষ্ট্র : বার্নিকাট

ক্রাইমবার্তা র্রিপোট: মাার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, জনগনের ইচ্ছার প্রতিফলন হয় – এমন একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সরকারও এ ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বুধবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত এর আগে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে চলতি মাসে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসঙ্ঘ সাধারন পরিষদের অধিবেশন নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে বার্নিকাট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চলতি মাসে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতিত্বকারী দেশ। রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ কিভাবে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে – তা নিয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সাথে আলোচনা হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ সাধারন পরিষদের অধিবেশনেরও বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি রোহিঙ্গা সঙ্কটকে গুরুত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘ সাধারন পরিষদের অধিবেশন শুরু হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে নয়দিনব্যাপী চলবে উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা অংশ নেবেন।

বিকালে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়। ভারত এ নিয়ে কথা বলতে চায় না। আমরা এই অবস্থানটি ধরে রাখতে চাই।

বিকাল তিনটা থেকে সোয়া চারটা পর্যন্ত পররাষ্ট্র সচিবের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাইকমিশনার। তিনি বলেন, ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চলমান প্রকল্পগুলোর অনেকগুলো শিগগির দৃশ্যমান হবে। সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ও হবে।

শ্রিংলা বলেন, এখন ভারত থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামী দিনে আরও চারশ’ থেকে পাঁচশ’ মেগাওয়াট ভারতীয় বিদ্যুৎ বাংলাদেশের গ্রিডে যোগ হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেল লাইনের বাংলাদেশ অংশের কাজের উদ্বোধন করবেন। এই রেল লাইনের ভারতীয় অংশের কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর গ্রিড থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আন্ত:গ্রিড সংযোগে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

আরো পড়ুন : সৌদি কারাগারে বাড়ছে বাংলাদেশীর সংখ্যা
মনির হোসেন ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:৩২

সৌদি আরবের জেদ্দা, দাম্মামসহ বিভিন্ন কারাগারে খুন, রাহাজানি, পাসপোর্ট জটিলতা, অবৈধভাবে অবস্থান করাসহ নানা অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে শত শত বাংলাদেশী বন্দী হয়ে আছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের হস্তক্ষেপে অনেকে কারামুক্ত হচ্ছেন। আবার অনেকে আইনি জটিলতার কারণে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অন্ধকার প্রকোষ্ঠে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

সম্প্রতি ‘জাল আউটপাসে’ বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার অভিযোগে এনামুল্লাহ নামে এক বাংলাদেশীকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই ফিরতি ফ্লাইটে সৌদি আরবে ফেরত পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই ব্যক্তি এক বছরের সাজা মাথায় নিয়ে দাম্মাম সেন্ট্রাল কারাগারে বন্দী। তিনি প্রকৃত বাংলাদেশী নাগরিক কিনা তার সত্যতা নিশ্চিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জরুরি চিঠি পাঠানো হয় প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। তবে ওই চিঠির ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে কী মতামত পাঠানো হয়েছে তা গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা সম্ভব হয়নি।

এর আগে গত ২ জুলাই সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এনামুল্লাহর সাজার মেয়াদ শেষে তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ইমারজেন্সি ট্রাভেল পারমিট প্রদানের ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড থেকে মতামত চাওয়া হয়।

গত ১৬ আগস্ট ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড থেকে দূতাবাসের চিঠিটি টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পাঠানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, সৌদি আরবের দাম্মাম সেন্ট্রাল জেলে আটক এনামুল্লাহ, পিতা মোহাম্মদ হোসেন, গ্রাম দেলপাড়া ওয়ার্ড নম্বর-৬, পোস্ট ও উপজেলা টেকনাফ, জেলা কক্সবাজারের সাজা শিগগিরই শেষ হবে। জেল কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক তাকে দূতাবাস থেকে আউটপাস সরবরাহ করতে হবে। এনামুল্লাহর বাংলাদেশী নাগরিকত্বের প্রমাণস্বরূপ তার জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের কপি দূতাবাসে দাখিল করেছেন। সেটির সঠিকতা যাচাই করা প্রয়োজন। চিঠিতে বলা হয়, এনামুল্লাহর দূতাবাসে দাখিল করা জন্মনিবন্ধনের সঠিকতা যাচাইপূর্বক জরুরি ভিত্তিতে এ কার্যালয়কে অবহিত করার জন্য নিবন্ধনের কপি সাথে পাঠানো হলো।

এর আগে গত ২ জুলাই সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, এনামুল্লাহ ২০১৭ সালের ১৬ জুন সৌদি সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমায় একজিট ভিসা সংগ্রহ করে বাংলাদেশে ফিরে যান। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে জাল আউটপাস দিয়ে ভ্রমণ করার অভিযোগে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দিয়ে সৌদি আরবে ফেরত পাঠানো হয়। সৌদি ইমিগ্রেশন তাকে আউটপাস জাল করার অপরাধে এক বছর জেল এবং পাঁচ হাজার রিয়াল জরিমানা করে। বর্তমানে তিনি কারা ভোগ করছেন। শিগগিরই তার সাজার মেয়াদ শেষ হবে এবং জেল কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক তাকে দূতাবাস থেকে আউটপাস সরবরাহ করতে হবে। এনাম তার বাংলাদেশী নাগরিকত্বের প্রমাণস্বরূপ জন্মনিবন্ধনের একটি কপি সরবরাহ করেছেন। কিন্তু তিনি তার অনুকূলে ইস্যুকৃত বাংলাদেশী পাসপোর্টের কোনো তথ্য দূতাবাসকে সরবরাহ করতে পারেননি বলে দূতাবাসের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে।

এ দিকে সৌদি আরবে অবস্থানরত একাধিক বাংলাদেশী গতকাল নয়া দিগন্তকে আপেক্ষ করে বলেন, আমরা এদেশে এসে অনেক কষ্টে আছি। ইকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নবায়ন না হওয়ায় পুলিশি অভিযানে শত শত বাংলাদেশী ধরা পড়ে জেলে আছে। কেউ কেউ নানা অপরাধ করে আটক আছে। তবে এদের মধ্যে অনেকে আবার আউট পাসে দেশেও ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও ঢাকায় দালালদের খপ্পরে পড়ে এখনো লাখ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরবে শ্রমিক আসছেন। অসহায় শ্রমিকদের একটি অংশ প্রতিদিন নানা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

Check Also

গাজায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজা ভূখণ্ডে আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।