ক্রাইমবার্তা ডেক্স রিপোর্টঃ
গৃহপালিত বিরোধী দল নয় ক্ষমতায় যেতে চাই এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, ‘আমরা আর গৃহপালিত বিরোধী দল হতে চাই না। দেশবাসীর ভালোবাসায়, নেতা-কর্মীদের শক্তি নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। এ জন্য আমরা প্রস্তুত।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের এক যৌথ সভায় এরশাদ এ কথা বলেন।
সভায় আগামী ৬ অক্টোবর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়।
এরশাদ বলেন,‘আমরা আর কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার হবো না। আমরা এককভাবে ক্ষমতায় যাব। জনগণ আমাদেরই এখন ক্ষমতায় দেখতে চায়।’ দেশে শান্তি নেই, বিশৃঙ্খলা চলছে। গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি চলছে। আমি দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাই।’
সভায় এরশাদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৬ অক্টোবর লাখো মানুষের মহাসমাবেশ হবে। মহাসমাবেশের মাধ্যমে দলের নির্বাচনী কৌশল জানিয়ে দেয়া হবে। ওই মহাসমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে আমরা কী কৌশল আমরা নেব, তা জানিয়ে দেয়া হবে।’
এরশাদ বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের আর পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সামনের এ নির্বাচন হলো আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার নির্বাচন।’ সভায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই এবার ক্ষমতায় যাব। জাতীয় পার্টির সামনে ক্ষমতাসীন হওয়ার সুযোগ এসেছে। তাই এখন দলকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
দলের তৃণমূল নেতাদের নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, ‘আমরাই আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাব।’
সভায় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমাদের এবারের সংগ্রাম, ক্ষমতায় যাওয়ার সংগ্রাম। এ সংগ্রামে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।’ তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির আমলেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হয়েছে। এরপর আর এত উন্নয়ন হয়নি।
যৌথসভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ, এস এম ফয়সাল চিশতি, সুনীল শুভ রায়, সৈয়দ আবুল হোসেন প্রমুখ। সভায় এরশাদ নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিক ইসলামিক ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাহফুজুল হক, বিএনএর সভাপতি সেকান্দার আলী, ইসলামী মহাজোটের সভাপতি আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
শোডাউন
জাতীয় পার্টির সমাবেশে ব্যাপক শোডাউন করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
শনিবার সকাল থেকেই বাবলার নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর-কদমতলি থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে।
পরে বেলা ১১টার দিকে জাপা নেতা সুজন দে, শেখ মাসুক রহমান, কাওসার আহমেদ ও ইব্রাহীম মোল্লার নেতৃত্বে পাঁচ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর বিশাল মিছিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে এলে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এতে ওই সড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
দলের যৌথসভা হলেও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সাংসদ সদস্যদের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারাও মিছিল নিয়ে যৌথসভায় যোগ দেন। ফলে যৌথসভা জনসভায় পরিণত হয়।
বাবলার পাশাপাশি পটুয়াখালী থেকে জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও বাগেরগঞ্জ থেকে তার স্ত্রী রত্ন আমিন হাওলাদার এবং বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি গোলাম মুর্তুজার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বিশাল মিছিল নিয়ে সকালে যৌখসভায় যোগদান করেন।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা, মানিকগঞ্জ থেকে জহিরুল আলম রুবেল, দোহার থেকে সালমা ইসলাম ও ঢাকা উত্তর থেকে শকিফুল ইসলাম সেন্টুর অনুসারীরা বড় মিছিল নিয়ে যৌথসভায় যোগ দেন।
সভা থেকে আগামী ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।