যশোর ব্যুরো: যশোরে লাশ উদ্ধারের ১১দিন পর জীবিত পাওয়া গেল আসল সাথীকে। আজ রোববার ভোরে সদর উপজেলার জলকার গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হলো চৌগাছা থেকে নিখোজ হওয়া এক সন্তানের জননী সাথীকে।
গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোর সরকারি সিটি কলেজ মসজিদের পাশ থেকে পলিথিনে মোড়ানো অজ্ঞাতপরিচয়ের এক তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে পরদিন যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় ছুটে যান চৌগাছার নয়ড়া গ্রামের আমজাদ আলী। তিনি অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটি তার মেয়ে সাথী খাতুনের বলে দাবি করেন। কিন্তু সেটি আসলে সাথী খাতুনের ছিল না।
তাৎক্ষণিক লাশ দেখে আবেগে লাশটি তার মেয়ের বলে শনাক্ত করেছিলেন আমজাদ আলী। কিন্তু পরবর্তীতে তদন্তে তিনি জানতে পারেন সেটি তার মেয়ে সাথীর লাশ ছিল না।
পরকীয়া প্রেমের টানে স্বামীর ঘর ছেড়েছিল আমজাদ আলীর মেয়ে সাথী। প্রেমিকের ধর্মপিতা সদর উপজেলার ইছালি ইউনিয়নের জলকর গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়ি থেকে সাথী খাতুনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সাথী খাতুন চৌগাছা উপজেলার নয়ড়া গ্রামের আমজাদ আলীর মেয়ে এবং একই উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের মোস্তফার স্ত্রী। তাদের ছয় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তার নাম এহসান। স্বামী সংসার ফেলে গত ১৪ জুলাই সে প্রেমিক চাঁদপাড়া গ্রামের মান্নুর ধর্মপিতার বাড়ি জলকর গ্রামে অবস্থান করছিল। মান্নু সাথীদের প্রতিবেশী এবং তার স্বামীর বন্ধু।
সাথীর ভাই বিপ্লব হোসেন জানান, সাথী গত ১৪ জুলাই ‘বাইরে কাজে যাচ্ছি, বিকেলে ফিরে আসবো’ বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান ছিল না।
এদিকে, সিটি কলেজ এলাকা থেকে গলাকাটা অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে পুলিশ। যশোর কোতয়ালি থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আমিরুজ্জামান জানান, পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে সাথী হত্যাকান্ডের শিকার হয়নি। সে জীবিত আছে এবং প্রেমিক মান্নুর ধর্মপিতা সদরের ইছালি এলাকার জলকার গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়ি অবস্থান করছে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। তাকে উদ্ধারের পর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এসআই আমিরুজ্জামান আরও জানান, স্বামী গোলাম মোস্তফার বাল্যবন্ধু মালয়েশিয়া প্রবাসী মান্নুর সঙ্গে সাথী খাতুনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। গত ১৬ মার্চ চিকিৎসার কথা বলে সাথী ভারতে যায়। ওই সময় মান্নুও মালয়েশিয়া থেকে ফিরে ভারতে যায়। ভারতে তারা ৮ দিন অবস্থানের পর দেশে ফিরে আসে। এরপর আরও একমাস সাথীকে নিয়ে মান্নু তার ধর্মপিতা আজিজ লস্করের বাড়িতে ছিল। এপ্রিল মাসে মান্নু আবার মালয়েশিয়া ফিরে গেলে সাথী বাড়ি ফিরে আসে। এ সময় সে বাড়িতে জানিয়েছিল, ‘এতদিন সে ভারতেই ছিল।’
এ ঘটনার পর গত ১৪ জুলাই আবারও বাড়ি থেকে বের হয় সাথী। বাড়ি থেকে বের হয়ে সে মান্নুর ধর্মপিতা আজিজ লস্করের বাড়িতে উঠেছিল। তার কথিত লাশ উদ্ধারের খবর ও ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর ওই এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয় এবং পুলিশ সাথীর সন্ধান পায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এখন তারা ‘অজ্ঞাতপরিচয় ওই লাশটি কার’ তা নিয়েও তদন্ত করবেন।#
Check Also
আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …