ক্রাইমবার্তা ডেক্স রিপোর্টঃ মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতি সব যাত্রীর পক্ষ থেকে শুধু এটুকুই বলেছে যে রাস্তায় বের হলে যেন তারা নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন। এমন নিরীহ একটি সংগঠনের নেতা মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে যদি রিমান্ডে নেয়ার মতো ঘটনা ঘটে, তবে হতবাক হতে হয়। অথচ সমস্ত ক্ষেত্রে শোনানো হচ্ছে, সরকার গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখছে, তাদের উন্নয়নের কোনো তুলনা নেই।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এতে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সামসুদ্দীন চৌধুরী এসব কথা বলেন। মোজাম্মেল হক চৌধুরী হচ্ছেন সংগঠটির সভাপতি।
সুলতানা কামাল আরো বলেন, এমন উন্নয়ন হচ্ছে যে রাস্তায় প্রতিদিন ১০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। উন্নয়নের নানা ক্ষেত্র আছে, কিন্তু সব জায়গায় মানুষের সব সময় সম্পৃক্ত হতে হয় না। মানুষকে প্রতিদিন পথে নামতে হয়, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে হয়। এটি মৌলিক অগ্রাধিকারের জায়গা। রাষ্ট্র যদি সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না পারে, তবে আমরা কথা বলব না? আমরা সোচ্চার হবো না?’ তিনি মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে মানবাধিকারকর্মী হিসেবে উপস্থাপন করে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন।
এদিকে শিশুকন্যা ফাতেমা তুজ জহুরাকে কোলে করে হাজির হয়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্ত্রী বিজু আক্তার বলেন, আমি এখন কোনো কথা বলার মতো মানসিক অবস্থায় নেই। শুধু প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যেন আমার স্বামীকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়া হয়।এরপর তিনি আর কথা বলতে পারেননি।
অপরদিকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সামসুদ্দীন চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে যাত্রী কল্যাণ সমিতি অত্যন্ত গঠনমূলকভাবে সততার সাথে যাত্রী অধিকার আন্দোলনকে চাঙ্গা করেছেন। সকল মহল এ আন্দোলনকে নৈতিকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। সড়ক নিরাপত্তায় সরকার যাতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে যাত্রী কল্যাণ সমিতি কাজ করে। সংগঠনের উদ্দেশ্য কাউকে দায়ী করা না, যাত্রী সাধারণের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ দেখিয়ে দেওয়া। দেশের ১৬ কোটি যাত্রীকে যারা জিম্মি করেছেন তারা গুটিকতক। এই অপশক্তি কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দিয়ে ভুল বুঝিয়ে নিজেদের অপকর্ম, সড়কে নৈরাজ্য চালানোর জন্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন। এই হুমকি-ধমকি তাকে যাত্রী অধিকার আন্দোলন থেকে বিরত করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। কায়েমি স্বার্থে একটি গোষ্টীর প্রতিহিংসার শিকারে আজ তিনি কারাগারে। একটি মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। দোষ তার একটাই তিনি সড়কে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করেন, সোচ্চার থাকেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি একটি নিবন্ধিত সংগঠন দাবি করে তিনি বলেন এই সংগঠন যাত্রীর অধিকার, যাত্রী সচেতনতা, নিয়ে কাজ করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি খায়রুল আমিন, যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন আহেমদ, নির্বাহী সদস্য আমান উল্যাহ মাহফুজ, ঢাকা মহানগর যাত্রী কল্যাণ সমিতির সদস্য মনিরুজ্জামান, মোঃ ফারুকসহ প্রমুখ।