ক্রাইমবার্তা ডেক্স রিপোর্টঃবাংলাদেশের নিজস্ব অথার্য়নে পদ্মা সেতুর নিমার্ণকাজ এ বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দীঘর্ বিলম্ব হতে পারে। পুরো কাজ সম্পন্ন করে যানচলাচল শুরু হতে ২০২২ সাল লেগে যেতে পারে বলেও ধারণা দিয়েছে চীনা প্রকৌশলীরা। পদ্মা নদীর জাজিরা প্রান্তে পঁাচটি স্প্যান বসানোয় বতর্মানে মূল সেতুর মাত্র ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। কিন্তু ৬.১৫ কিলোমিটার দীঘর্ এ সেতুর নিমাের্ণ এখনো বহু কাজ বাকি। পদ্মার মাওয়া প্রান্তে শুধু চারটি পিয়ার বসেছে। এ অংশে কোনো স্প্যান বসেনি। আর নদীর মূল চ্যানেলে সাতটি পিয়ারের নকশা এখনো দেয়া হয়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা পরিদশের্ন গিয়ে দেখা হয় সেতু প্রকল্পে কমর্রত দুজন চীনা প্রকৌশলীর সঙ্গে। তাদের পরিচয় জানতে পেরে বলা হয়, এ সেতুর ওপর দিয়ে কবে যানচলাচল শুরু হবে এটি জানার আগ্রহ বাংলাদেশের বহু মানুষের। চায়না মেজর ব্রিজের দুই প্রকৌশলী বলে দিলেন ২০২২ সাল পযর্ন্ত অপেক্ষা করতে। এত সময় কেন প্রয়োজন জানতে চাইলে এদের একজন পিয়ে সিউ বলেন, ‘আমরা ২০২২ সালের ধারণা দিচ্ছি বতর্মান পরিস্থিতির বিবেচনায়। এখনো অনেক কাজ করার বাকি আছে।’ পিয়ে সিউ এমবিসি-৫ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার। মূল সেতুর দুই পাশের ভায়াডাক্ট এবং মূল সেতুর ওপরের স্প্যান বসানোর দায়িত্ব এমবিসি-৫ এর। সিউ জাজিরা অংশে স্থাপিত সেতুর স্প্যান দেখিয়ে বলেন, ‘এই যে স্টিলের কাঠামো এটা একটার পর একটা নিখুঁতভাবে বসাতে হবে। এতে সময় লাগে, বেশ খানিকটা সময়। আর এখনো আমরা সাতটি পিয়ারের চ‚ড়ান্ত ডিজাইন পাইনি। আমি এখন নকশার জন্য অপেক্ষায় আছি। নকশা হাতে পেলেই আমি তোমাকে বলতে পারব ঠিক কবে এর নিমার্ণকাজ শেষ হতে পারে।’ এমবিসি-৫ এর প্রধান প্রকৌশলী হু বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো আমরা বলতে পারছি না সেতু নিমার্ণ শেষ হতে ঠিক কত অতিরিক্ত সময় দরকার। কারণ এর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত।’ সেতু নিমাের্ণর অগ্রগতি নিয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল হক বলেন, এখন পযর্ন্ত মূল সেতুর ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদী শাসনের আর প্রকল্পের সাবির্ক অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ। আর কতদিন অতিরিক্ত সময় দেয়া হবে এ প্রশ্নে শফিকুল হক বলেন, ‘কন্ট্রাক্টর দুই বছরেরও বেশি চেয়েছে। এত টাইম তো দেয়া যাবে না। আমরা মনে করি, তারা অনেক বেশি সময় চেয়েছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আমরা এ মাসের মধ্যেই জানিয়ে দেব, আসলে কতদিন অতিরিক্ত সময় দেয়া যায়।’ প্রকল্প পরিচালক জানান, পদ্মার মূল চ্যানেলে পাইল বসানো শুরুর পর যে সমস্যা দেখা গিয়েছিল সেটি সমাধান কীভাবে হবে সে নকশা মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শেষ পযাের্য় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কাজ পিছিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ যে আমরা সবগুলো ডিজাইন দিতে পারি নাই। আমাদের মেইন ব্রিজের ৪০টা পিয়ার ছিল আমরা এর সবগুলো দিতে পারি নাই। আমাদের ডিজাইনার খুবই সতকর্। কারণ এখানে এমন কিছু কাজ হচ্ছে যেটা অতীতে কোথাও কখনো হয়নি। বিশ্বের অনেকে এই কাজটা পযের্বক্ষণ করছে।’ তবে চীনা প্রকৌশলীরা যে তিন বছর অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন বলে ধারণা করছেন পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক এর সঙ্গে একমত নন। আর পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য জানান, সমস্যা যেটা ছিল সেটি সমাধানের পথ পাওয়া গেছে। ডিজাইন দেয়ার পর কাজের গতি বাড়বে বলেও মনে করা হচ্ছে।
Check Also
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের কর্মশালায় সাংবাদিকদের দাওয়াত নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় হাওর না থাকলেও হাওরের ১০০ বছর এবং আমাদের করণীয়” বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত …