গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জামায়াত থাকলে তাঁর দল কোনো ঐক্য প্রক্রিয়ায় যাবে না। অন্য কোনো দল করবে কি না, তা তিনি জানেন না।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল এ কথা বলেন। জামায়াতকে রেখে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সারা জীবনে করিনি, শেষ জীবনে করতে যাব কেন? ওরা তো এখন দলও না। নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কয়েক মাস ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ঐক্য ও জোটের সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের—জেএসডি সভাপতি ও নাগরিক ঐক্য মিলে যুক্তফ্রন্ট নামে একটি জোট গঠন করেছে। গত মাসের শেষ দিকে গণফোরাম এদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেয়। এই জোটের সঙ্গে বিএনপির এক হয়ে ‘জাতীয় ঐক্য’ বা ‘বৃহত্তর ঐক্য’ নামে একটি জোট করার কথা হচ্ছে। সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও যুক্তফ্রন্টের নেতারা একটি অনুষ্ঠানে একসঙ্গে কাজ করার কথা জানান। তবে বিএনপির দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী জামায়াত, যাদের ব্যাপারে যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম বরাবরই বলে আসছে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাদাপোশাকে ধরপাকড় নিয়ে গণফোরামের সভাপতি কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সাদাপোশাক পরে কাউকে ধরার কোনো বিধান নেই। কাউকে ধরতে হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকতে হবে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। কিন্তু এসব না করে আইন অমান্য করা হচ্ছে। নিয়মিত আইন অমান্য করে সরকার সংবিধানকে অমান্য করছে।’
ধরার পর প্রথমে অস্বীকার করে পরে স্বীকার করা হচ্ছে, অভিযোগ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘এই লুকোচুরি করা সরকারের ঠিক না।’
সাদাপোশাকে ধরে নিয়ে যাওয়াকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘সাদাপোশাকে এরা কারা? সাধারণ মানুষ যদি উল্টো প্রশ্ন করে তুমি কে? পোশাক না পরলে তো মানুষ ভাববে ছিনতাইকারী। মানুষকে অন্যায়ভাবে কিডন্যাপ করা হচ্ছে।’ এভাবে ধরে নেওয়া বন্ধ না হলে তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে জানান।
গতকাল বিএনপির মানববন্ধন থেকে সাদাপোশাকে দলটির নেতা-কর্মীদের ধরে নেওয়ারও সমালোচনা করেন ড. কামাল হোসেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বিচারের জন্য ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালতকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, সংবিধান অমান্য করে এটা করা হয়েছে।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারের ভুলে যাওয়া উচিত না আমরা সভ্য সমাজে বাস করি। অসুস্থ মানুষের প্রতি যে কর্তব্য, তা পালন করা উচিত।’