প্যারোলে মুক্ত নওয়াজ শরিফ: কিন্তু মুক্তি তিনি চাননি, কেন?

ক্রাইসবার্তা ডেস্করির্পোটঃক্যান্সারের বিরুদ্ধে এক বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে হার মেনেছেন পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (বর্তমানে কারাবন্দী) নওয়াজ শরিফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ। লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার।

স্ত্রীর মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন নওয়াজ। যদিও তিনি প্যারোল চাননি বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের জিও নিউজ। কারাকর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও প্যারোল আবেদনে সই করাতে পারেননি নওয়াজকে। বাবার মতোই কন্যা মরিওম নওয়াজও প্যারোল আবেদনে স্বাক্ষর করেননি।

অবশেষে নওয়াজরে ছোট ভাই ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের(এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ নওয়াজ ও মরিয়মের পক্ষে প্যারোল আবেদন
করেন। পানামা পেপারর্স কেলেঙ্কারিতে নাম আসার পর লন্ডনে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় কারাদণ্ড হয় নওয়াজ শরিফ ও তার কন্যা মরিয়মের।

নওয়াজ শরিফ কেন প্যারোল চাননি সেই প্রশ্নের জবাব তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে ক্ষোভ থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক মাস আগে আদালতের রায়ের পর নওয়াজ অসুস্থ স্ত্রীকে লন্ডনে রেখে দেশে আসেন, তার সাথে আসেন কন্যা মরিয়মও। জানাই ছিলো যে, দেশে আসা মাত্র গ্রেফতার হবেন। তবু দেশ থেকে পালিয়ে থাকেননি নওয়াজ শরিফ। এয়ারপোর্টেই গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। সেই থেকেই ইসলামাবাদের আদিয়ালা কারাগারে আছেন বাপ-কন্যা। কারাবন্দী অবস্থাতেই শুনলেন ৪৭ বছরের সঙ্গী চলে গেছে পরকালে।

পাকিস্তানের জিও টিভি জানিয়েছে, গত এক মাস ধরে কুলসুম হাসপাতালে ছিলেন। লন্ডনের হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে কুলসুম নওয়াজকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত কুলসুমের অবস্থা আগের রাত থেকেই অবনতির দিকে যেতে থাকে।

গত বছরের আগস্টে ক্যান্সার ধরা পরে তিনবারের এই সাবেক ফার্স্ট লেডির শরীরে। তার পর থেকেই চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি লন্ডেনে থাকছেন। সেখানে তার বেশ কয়েকটি অস্ত্রপচার ও অন্তত ৫টি কেমোথেরাপি দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন :

প্যারোলে মুক্ত নওয়াজ শরিফ

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়েকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়েছে। স্ত্রীর দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সাময়িক এ মুক্তি দেয়া হয়। বুধবার সরকার ও দলীয় সূত্র একথা জানিয়েছে।

মঙ্গলবার লন্ডনে কুলসুম নওয়াজ মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার স্বামী ও মেয়ে দুই মাস আগে পাকিস্তানে এলে দুর্নীতির দায়ে তাদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়।

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে শরিফ তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পার্টির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে এসেছিলেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

মঙ্গলবার রাতে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নওয়াজ ও তার মেয়ে মারিয়াম একটি বিমানে করে লাহোর নগরীতে পৌঁছান। সেখানে সাবেক ফার্স্ট লেডিকে দাফন করা হবে। বুধবার পিএমএল-এন শরিফ ও তার মেয়েকে বিমানে চড়া অবস্থায় একটি ছবি প্রকাশ করে।

রাওয়ালপিন্ডির কেন্দ্রীয় জেলখানার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নওয়াজ ও তার মেয়েকে জানাজা ও দাফনে অংশ নেয়ার জন্য ১২ ঘন্টার জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে বিশেষ বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সময় বাড়াতে পারে।’

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার কুলসুম নওয়াজকে দাফন করা হবে। নওয়াজ ও তার মেয়েকে দাফনকাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত প্যারোল দেয়া হতে পারে।

কুলসুম নওয়াজ (৬৮) তার স্বামীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে পাশে ছিলেন। নওয়াজ শরিফ তিন তিনবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।